ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ সালাউদ্দিনকে ‘গডফাদার’ ডাকায় উত্তাল কক্সবাজার, এনসিপির সমাবেশে ভাঙচুর চাঁদা নেব না, নিতেও দেব না: জামায়াত আমির বক্তব্যের মাঝে মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির মজলুমরা আজ জালিম হয়ে উঠছে: নুর জামায়াতের সমাবেশে দাওয়াত পায়নি বিএনপি বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের জায়গা হবে না: জামায়াতের সমাবেশে সারজিস উগান্ডায় বোম পড়লেও কি বিএনপির দোষ?: পার্থ বর্তমানে আওয়ামী লীগ বলে কিছু নেই, এটি একটি মাফিয়া চক্রে পরিণত: সোহেল তাজ ভারতের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আমার ছেলে শহীদ হয়: আবরার ফাহাদের বাবা

“ইসরায়েলকে চূড়ান্ত জবাব আসছে: জাতির উদ্দেশে খামেনির হুঁশিয়ারি ভাষণ”

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৬:৩৬:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
  • ১৯৪ বার পড়া হয়েছে

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা যখন পূর্ণ মাত্রার সংঘাতের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে জাতির উদ্দেশে দৃঢ় ও আবেগঘন ভাষণ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। শনিবার (১৪ জুন) ইরানি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এই ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের চূড়ান্ত জবাব আসছে।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “ইরান একটি ঐক্যবদ্ধ ও ঈমানদার জাতি—তাদের ঘাড়ে কেউ চড়তে পারবে না।”

সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে এই ভাষণ দেন খামেনি, যেখানে ইরানি সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ভাষণের শুরুতেই তিনি নিহতদের ‘শহীদ’ আখ্যা দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “কয়েকজন প্রিয় কমান্ডার, দক্ষ বিজ্ঞানী ও নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক শাহাদাত বরণ করেছেন। এটি যেমন শোকের, তেমনি গর্বের—কারণ তাঁরা দেশ ও ইসলামের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন।”

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়ে খামেনি বলেন, “ইহুদিবাদী শত্রু এক ভয়ানক অপরাধ করেছে, যার কোনো পরিণতি ছাড়াই তারা পার পাবে না। ইসরায়েল শুধু একটি হামলা চালিয়ে দায় শেষ করেছে এমনটা ভেবে ভুল করছে। প্রকৃতপক্ষে এই হামলার মধ্য দিয়েই যুদ্ধ শুরু করেছে তারা।”

তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন এবং সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।”

খামেনি আরও জানান, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী—বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি), সেনাবাহিনী, বিমান প্রতিরক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট—পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, “দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে সাধারণ জনগণ পর্যন্ত সবাই আমাদের সেনাবাহিনীর পাশে রয়েছে। যারা ভাবছে তারা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে, তারা চরম ভুল করছে।”

ধর্মীয় আবেগে ভরপুর বক্তব্যে তিনি বলেন, “আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা বিজয় অর্জন করব, ইসরায়েল পরাজিত হবে। ইরানি জাতি কখনো তাদের শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেবে না।”

ভাষণের শেষ দিকে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “ইসরায়েল ও তার মিত্ররা যদি মনে করে তারা উসকানি দিয়ে পার পেয়ে যাবে, তবে তারা ইতিহাস ভুলে গেছে। এই অঞ্চলে শান্তির একমাত্র পথ হলো ন্যায়বিচার ও আগ্রাসনের অবসান।”

বিশ্লেষকরা এই ভাষণকে দেখছেন একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে, যা ইঙ্গিত দেয়, ইরান এবার হয়তো সরাসরি বড় ধরনের সামরিক জবাব দিতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে তা পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে—যার অভিঘাত বিশ্ব রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

অন্যদিকে ইসরায়েলও মার্কিন সমর্থন নিয়ে সামরিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবমিলিয়ে, মধ্যপ্রাচ্য আবারও এক গভীর যুদ্ধের মুখোমুখি।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ

“ইসরায়েলকে চূড়ান্ত জবাব আসছে: জাতির উদ্দেশে খামেনির হুঁশিয়ারি ভাষণ”

আপডেট সময় ০৬:৩৬:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা যখন পূর্ণ মাত্রার সংঘাতের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে জাতির উদ্দেশে দৃঢ় ও আবেগঘন ভাষণ দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। শনিবার (১৪ জুন) ইরানি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এই ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের চূড়ান্ত জবাব আসছে।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “ইরান একটি ঐক্যবদ্ধ ও ঈমানদার জাতি—তাদের ঘাড়ে কেউ চড়তে পারবে না।”

সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে এই ভাষণ দেন খামেনি, যেখানে ইরানি সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ভাষণের শুরুতেই তিনি নিহতদের ‘শহীদ’ আখ্যা দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “কয়েকজন প্রিয় কমান্ডার, দক্ষ বিজ্ঞানী ও নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক শাহাদাত বরণ করেছেন। এটি যেমন শোকের, তেমনি গর্বের—কারণ তাঁরা দেশ ও ইসলামের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন।”

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়ে খামেনি বলেন, “ইহুদিবাদী শত্রু এক ভয়ানক অপরাধ করেছে, যার কোনো পরিণতি ছাড়াই তারা পার পাবে না। ইসরায়েল শুধু একটি হামলা চালিয়ে দায় শেষ করেছে এমনটা ভেবে ভুল করছে। প্রকৃতপক্ষে এই হামলার মধ্য দিয়েই যুদ্ধ শুরু করেছে তারা।”

তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন এবং সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।”

খামেনি আরও জানান, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী—বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি), সেনাবাহিনী, বিমান প্রতিরক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিট—পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, “দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে সাধারণ জনগণ পর্যন্ত সবাই আমাদের সেনাবাহিনীর পাশে রয়েছে। যারা ভাবছে তারা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে, তারা চরম ভুল করছে।”

ধর্মীয় আবেগে ভরপুর বক্তব্যে তিনি বলেন, “আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা বিজয় অর্জন করব, ইসরায়েল পরাজিত হবে। ইরানি জাতি কখনো তাদের শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেবে না।”

ভাষণের শেষ দিকে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “ইসরায়েল ও তার মিত্ররা যদি মনে করে তারা উসকানি দিয়ে পার পেয়ে যাবে, তবে তারা ইতিহাস ভুলে গেছে। এই অঞ্চলে শান্তির একমাত্র পথ হলো ন্যায়বিচার ও আগ্রাসনের অবসান।”

বিশ্লেষকরা এই ভাষণকে দেখছেন একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে, যা ইঙ্গিত দেয়, ইরান এবার হয়তো সরাসরি বড় ধরনের সামরিক জবাব দিতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে তা পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে—যার অভিঘাত বিশ্ব রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

অন্যদিকে ইসরায়েলও মার্কিন সমর্থন নিয়ে সামরিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবমিলিয়ে, মধ্যপ্রাচ্য আবারও এক গভীর যুদ্ধের মুখোমুখি।