উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন ইসরায়েলকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের ক্যানসার’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি মন্তব্য করেন, ইসরায়েলের কারণেই এই অঞ্চলে শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে এবং তারাই বিশ্বশান্তি ধ্বংসের মূল অপরাধী।
ইসরায়েল-ইরান সংঘাত ইস্যুতে বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি দিয়েছে, যেখানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “১৩ জুন ভোরে ইরানের ওপর বেপরোয়াভাবে বৃহৎ পরিসরে সামরিক আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা। এটা একটা অবৈধ কাজ, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে এবং এটি মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে একটি নতুন সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করছে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের মূলনীতি লঙ্ঘন করে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের বেপরোয়া সামরিক আক্রমণ প্রতিদিনই বাড়ছে, যা একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার অযৌক্তিক লঙ্ঘন এবং মানবতার বিরুদ্ধে একটি অমার্জনীয় অপরাধ।”
প্রেসিডেন্ট কিম জং উন তার সরকারি ভাষণে বলেন, “বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে আমেরিকা-পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত ও পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির জন্য একটি ক্যানসারের মতো সত্তা। এটি বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা ধ্বংসের ক্ষেত্রে প্রধান অপরাধী।”
তিনি আরও বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের চারটি যুদ্ধ এবং অতীতে কয়েক ডজন সামরিক আক্রমণের মাধ্যমে ইসরায়েল ক্রমাগতভাবে তার অঞ্চল সম্প্রসারণ করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা, জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর, লেবানন, সিরিয়া এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দেশে সামরিক আক্রমণ বাড়িয়েছে, যার ফলে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে এবং একটি গুরুতর মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।”
উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বেরও কড়া সমালোচনা করে। দেশটির ভাষ্যমতে, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যে, আমেরিকা ও পশ্চিমা শক্তি যুদ্ধের আগুন উসকে দিচ্ছে এবং ইরানের বৈধ আত্মরক্ষার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। ইসরায়েলের ভূখণ্ড সম্প্রসারণের উন্মাদনাকে নিন্দা না করে তারা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে একটি অনিয়ন্ত্রিত বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
বিবৃতির শেষে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধ নিয়ে আসা ইহুদীবাদীরা এবং পর্দার আড়ালে থাকা তাদের পৃষ্ঠপোষকরা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা ধ্বংসের জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী থাকবে।