ঢাকা , বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
এমন বৃষ্টি থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস চীন সফরে যাচ্ছে জামায়াতের প্রতিনিধিদল ভারতের ঢলে ভেঙে গেল ৩ নদীর বাঁধ, ডুবে গেল ৩০ গ্রাম কক্সবাজার সৈকতে ভেসে এলো আরও এক শিক্ষার্থীর মরদেহ ইরানের হাতে এসেছে চীনের আধুনিক হিউ কিউ-৯ এয়ার ডিফেন্স মিসাইল বিশ্ব আর কোনো সম্রাট চায় না: ট্রাম্পকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি আগামী নির্বাচনে বেশির ভাগ মানুষ ভোটই দিতে যাবে না: মাসুদ কামাল যাত্রাবাড়ী গণহত্যা: ৫২ জন নিহতের বিবিসি অনুসন্ধান উন্মোচন করল ইতিহাসের নির্মম এক অধ্যায় প্রায় ৪০ বছর পর ফের ইরানে অস্ত্র সরবরাহ শুরু করল চীন জুলাই আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

ইরানের পাল্টা আঘাতে ভেঙে পড়ছে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৭:১৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
  • ৩৩৯ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ নিরাপদ আকাশসীমার অধিকারী হিসেবে পরিচিত ছিল ইসরাইল। ‘আয়রন ডোম’, ‘অ্যারো-২’, ‘অ্যারো-৩’, ‘ডেভিড’স স্লিং’সহ বহুস্তরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সুসজ্জিত এই দেশটির আকাশসীমা প্রায় অজেয় বলেই বিবেচিত হতো। কিন্তু ইরানের সাম্প্রতিক পাল্টা আঘাতে সেই আস্থার দুর্গে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।

হাইপারসনিক প্রযুক্তি, ডেকয় কৌশল ও ধারাবাহিক ব্যারেজ আক্রমণের মাধ্যমে ইরান ইসরাইলের গর্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করে তেহরান শুধু হামলা চালায়নি, বরং সরাসরি আঘাত হেনেছে ইসরাইলের প্রযুক্তিগত আধিপত্যের কেন্দ্রবিন্দুতে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোরে ইরানে পরমাণু কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে সেখানে নির্বিচারে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এর জবাবে ইসরাইল লক্ষ্য করে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। শুরু হয় সরাসরি সামরিক সংঘাত, যা এখনো অব্যাহত। সংঘাতে এখন পর্যন্ত ইরানের ২৪০ জন এবং ইসরাইলের অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, প্রতি মাসে ৩০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে ইরান। তার ভাষ্য অনুযায়ী, এই গতিতে চলতে থাকলে ছয় বছরের মধ্যে ইরানের হাতে ২০ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে—যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই হবে এক মারাত্মক হুমকি। যদিও তিনি তার দাবির পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করেননি, তবে তার বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য কেবল কৌশলগত হুঁশিয়ারিই নয়, বরং ইরানকে সামরিক আগ্রাসনের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপনের একটি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।

এদিকে, মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের (সেন্টকম) সাবেক প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালেই ইরানের হাতে বিভিন্ন ধরনের ৩ হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। যদিও বর্তমানে সেই সংখ্যা কত, তা নির্ভুলভাবে জানা যায়নি।

সাম্প্রতিক হামলাগুলোর মধ্যে ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরাইলের একটি সামরিক গোয়েন্দা কেন্দ্র এবং মোসাদের একটি পরিকল্পনা কেন্দ্রেও আঘাত হেনেছে। এতে বোঝা যায়, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর থাকছে না।

বিশেষ করে, ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষার প্রথম স্তম্ভ ‘আয়রন ডোম’ নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। ২০১১ সালে চালু হওয়া এই স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম। ইসরাইল দাবি করে, এটি ৯০ শতাংশ সফল। তবে ইরানের টানা ব্যারেজ হামলায় সেটিও স্পষ্টভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

সূত্র: আলজাজিরা, সিএনএন

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

এমন বৃষ্টি থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস

ইরানের পাল্টা আঘাতে ভেঙে পড়ছে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

আপডেট সময় ০৭:১৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ নিরাপদ আকাশসীমার অধিকারী হিসেবে পরিচিত ছিল ইসরাইল। ‘আয়রন ডোম’, ‘অ্যারো-২’, ‘অ্যারো-৩’, ‘ডেভিড’স স্লিং’সহ বহুস্তরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সুসজ্জিত এই দেশটির আকাশসীমা প্রায় অজেয় বলেই বিবেচিত হতো। কিন্তু ইরানের সাম্প্রতিক পাল্টা আঘাতে সেই আস্থার দুর্গে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।

হাইপারসনিক প্রযুক্তি, ডেকয় কৌশল ও ধারাবাহিক ব্যারেজ আক্রমণের মাধ্যমে ইরান ইসরাইলের গর্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করে তেহরান শুধু হামলা চালায়নি, বরং সরাসরি আঘাত হেনেছে ইসরাইলের প্রযুক্তিগত আধিপত্যের কেন্দ্রবিন্দুতে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোরে ইরানে পরমাণু কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে সেখানে নির্বিচারে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এর জবাবে ইসরাইল লক্ষ্য করে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। শুরু হয় সরাসরি সামরিক সংঘাত, যা এখনো অব্যাহত। সংঘাতে এখন পর্যন্ত ইরানের ২৪০ জন এবং ইসরাইলের অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, প্রতি মাসে ৩০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে ইরান। তার ভাষ্য অনুযায়ী, এই গতিতে চলতে থাকলে ছয় বছরের মধ্যে ইরানের হাতে ২০ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে—যা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই হবে এক মারাত্মক হুমকি। যদিও তিনি তার দাবির পক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করেননি, তবে তার বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য কেবল কৌশলগত হুঁশিয়ারিই নয়, বরং ইরানকে সামরিক আগ্রাসনের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপনের একটি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা।

এদিকে, মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের (সেন্টকম) সাবেক প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালেই ইরানের হাতে বিভিন্ন ধরনের ৩ হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। যদিও বর্তমানে সেই সংখ্যা কত, তা নির্ভুলভাবে জানা যায়নি।

সাম্প্রতিক হামলাগুলোর মধ্যে ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরাইলের একটি সামরিক গোয়েন্দা কেন্দ্র এবং মোসাদের একটি পরিকল্পনা কেন্দ্রেও আঘাত হেনেছে। এতে বোঝা যায়, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর থাকছে না।

বিশেষ করে, ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষার প্রথম স্তম্ভ ‘আয়রন ডোম’ নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। ২০১১ সালে চালু হওয়া এই স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম। ইসরাইল দাবি করে, এটি ৯০ শতাংশ সফল। তবে ইরানের টানা ব্যারেজ হামলায় সেটিও স্পষ্টভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

সূত্র: আলজাজিরা, সিএনএন