ঢাকা , সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
মেহেরপুরে খোকসা যুব সংঘের কমিটি গঠন: সভাপতি হামিদুল, সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা নাটোরে জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি-জাতীয় পার্টির ৫০ নেতাকর্মী বরিশালে জামায়াত নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা মেহেরপুরে পদ্মফুল তুলতে গিয়ে একই পরিবারের চার শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু বিএনপির পাঁচ নেতাকে সব পদ থেকে বহিষ্কার ‘ফজু পাগলা’ উপাধিতে গর্বিত বিএনপি প্রার্থী ফজলুর রহমান: বলেন, আমার জন্য সারা দেশের মানুষ পাগল গৌরীপুরে সংঘর্ষের জেরে বিএনপির ৫ নেতা বহিষ্কার জিয়া পরিবারের আদর্শ ধরে রাখতে জীবন দিতেও পিছু হটবো না: এস এম জাহাঙ্গীর শাপলাকলি’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে এনসিপি: জনগণের রাজনীতি গড়ে তুলতে আহ্বান নাহিদ ইসলামের গৌরীপুরে বিএনপির মনোনয়ন দ্বন্দ্বে সংঘর্ষ: নিহত ১, আহত অন্তত ৪০

মেরুদণ্ডহীন কমিশন নয়, কার্যকর মানবাধিকার কমিশন দরকার: দেবপ্রিয়

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০১:০৯:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

বিগত সময়ে নখদন্তহীন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন উপহার দেওয়া হয়েছে। আমরা ওইরূপ নখদন্তহীন ও মেরুদণ্ডহীন মানবাধিকার কমিশন চাই না। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এসডিজি বাস্তবায়ন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত সেমিনারে প্রতিষ্ঠানটির আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।

 

সেমিনারের বিষয় ছিল—জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫। অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন।

 

 

 

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মানবাধিকার কমিশন গঠনে ড. ফখরুউদ্দীনের সরকারের সময় আইনের খসড়া তৈরি হয়। ওই আইনের ভিত্তিতে পরবর্তী সরকারের সময় কমিশন গঠিত হয়। নতুন সরকার আইনটি অনুমোদন দেন। ওই আইনের অধীনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য নিয়োগ হয়। এরপর ২০২৪ সাল পর্যন্ত একাধিক চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর কমিশন বাতিল করা হয়। এরপর প্রায় এক বছর ধরে বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নেই। অথচ সরকার এ সময়ে অন্যান্য কমিশন গঠন করেছে।

 

তিনি বলেন, ওই সময়ে কমিশন গঠিত না হলেও সরকার মানবাধিকার বিষয়ে আইন প্রণয়নের চেষ্টা করেছে। বিগত সময়ে কমিশনের ইতিহাস বিবেচনায় নিলে প্রশ্ন থেকে যায়-দেশের মানবাধিকারের কি কোনো উন্নতি হয়েছে? অন্যদিকে নতুন খসড়া আইনে নতুনত্ব কী আছে, যার ফলে পিছিয়ে পড়া মানুষের মানবাধিকারের বিষয়টি বাস্তবায়ন হবে? আমার উপলব্ধি হলো, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আমাদের বিগত সময়ে নখদন্তহীন মানবাধিকার কমিশন উপহার দেওয়া হয়েছে। যার কোনো দক্ষতা নেই কিংবা কার্যক্ষমতা নেই। আমার প্রথম চাওয়া হলো, আমরা এরূপ নখদন্তহীন মানবাধিকার কমিশন চাই না, যারা কার্যকরভাবে মানবাধিকার রক্ষা করতে পারবে সেইরকম কমিশন চাই।

 

 

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আরেকটি হলো নখদন্তহীন মানবাধিকার কমিশনের মাথায় একজন মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষকে বসিয়ে দেবেন না। সেই মানুষ কোনো দিন অন্য কোনো মানুষের জন্য মেরুদণ্ড শক্ত করে কাজ করতে পারবে না। এজন্য মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষের প্রয়োজন নেই। আমাদের সৎ, নীতিবান ও সাহস করে সরকারের সঙ্গে লড়াই করতে পারে, সেই মানুষ প্রয়োজন।

 

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, বিগত সময়ে অনেক ক্ষেত্রেই পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে মানবাধিকার ইস্যু কাজ করেনি। অন্যান্য ক্ষেত্রে সফল হয়। কেন হয় না, সেটা বিবেচনা করা উচিত। খসড়া আইনেও বিষয়টি উপেক্ষিত মনে হয়েছে। নতুন আইনে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে। কোনো আমলাকে এখানে নিয়োগ দেওয়া যাবে না, কিন্তু এখানে সেই সুযোগ রয়েছে, যা প্যারিস চুক্তির সুস্পষ্ট লংঘন।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান দুটি উদ্দেশ্যের কথা উলে­খ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের প্রেক্ষাপটে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এনএইচআরসি) ম্যান্ডেট ও কার্যপরিধি গঠন এবং স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতার বিশ্লেষণ। দ্বিতীয়ত প্রস্তাবিত খসড়াকে অধিকতর কার্যকর করার জন্য পরামর্শ দেওয়া, যাতে অধ্যাদেশটিকে নির্ভরযোগ্য অনুসন্ধানী ক্ষমতা প্রয়োগ, ভুক্তভোগী ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা প্রদান এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ম্যান্ডেট দ্বারা সমৃদ্ধ করা যায়।

 

 

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মেহেরপুরে খোকসা যুব সংঘের কমিটি গঠন: সভাপতি হামিদুল, সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা

মেরুদণ্ডহীন কমিশন নয়, কার্যকর মানবাধিকার কমিশন দরকার: দেবপ্রিয়

আপডেট সময় ০১:০৯:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিগত সময়ে নখদন্তহীন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন উপহার দেওয়া হয়েছে। আমরা ওইরূপ নখদন্তহীন ও মেরুদণ্ডহীন মানবাধিকার কমিশন চাই না। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এসডিজি বাস্তবায়ন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত সেমিনারে প্রতিষ্ঠানটির আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।

 

সেমিনারের বিষয় ছিল—জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫। অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন।

 

 

 

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মানবাধিকার কমিশন গঠনে ড. ফখরুউদ্দীনের সরকারের সময় আইনের খসড়া তৈরি হয়। ওই আইনের ভিত্তিতে পরবর্তী সরকারের সময় কমিশন গঠিত হয়। নতুন সরকার আইনটি অনুমোদন দেন। ওই আইনের অধীনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য নিয়োগ হয়। এরপর ২০২৪ সাল পর্যন্ত একাধিক চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর কমিশন বাতিল করা হয়। এরপর প্রায় এক বছর ধরে বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নেই। অথচ সরকার এ সময়ে অন্যান্য কমিশন গঠন করেছে।

 

তিনি বলেন, ওই সময়ে কমিশন গঠিত না হলেও সরকার মানবাধিকার বিষয়ে আইন প্রণয়নের চেষ্টা করেছে। বিগত সময়ে কমিশনের ইতিহাস বিবেচনায় নিলে প্রশ্ন থেকে যায়-দেশের মানবাধিকারের কি কোনো উন্নতি হয়েছে? অন্যদিকে নতুন খসড়া আইনে নতুনত্ব কী আছে, যার ফলে পিছিয়ে পড়া মানুষের মানবাধিকারের বিষয়টি বাস্তবায়ন হবে? আমার উপলব্ধি হলো, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আমাদের বিগত সময়ে নখদন্তহীন মানবাধিকার কমিশন উপহার দেওয়া হয়েছে। যার কোনো দক্ষতা নেই কিংবা কার্যক্ষমতা নেই। আমার প্রথম চাওয়া হলো, আমরা এরূপ নখদন্তহীন মানবাধিকার কমিশন চাই না, যারা কার্যকরভাবে মানবাধিকার রক্ষা করতে পারবে সেইরকম কমিশন চাই।

 

 

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আরেকটি হলো নখদন্তহীন মানবাধিকার কমিশনের মাথায় একজন মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষকে বসিয়ে দেবেন না। সেই মানুষ কোনো দিন অন্য কোনো মানুষের জন্য মেরুদণ্ড শক্ত করে কাজ করতে পারবে না। এজন্য মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষের প্রয়োজন নেই। আমাদের সৎ, নীতিবান ও সাহস করে সরকারের সঙ্গে লড়াই করতে পারে, সেই মানুষ প্রয়োজন।

 

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, বিগত সময়ে অনেক ক্ষেত্রেই পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে মানবাধিকার ইস্যু কাজ করেনি। অন্যান্য ক্ষেত্রে সফল হয়। কেন হয় না, সেটা বিবেচনা করা উচিত। খসড়া আইনেও বিষয়টি উপেক্ষিত মনে হয়েছে। নতুন আইনে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে। কোনো আমলাকে এখানে নিয়োগ দেওয়া যাবে না, কিন্তু এখানে সেই সুযোগ রয়েছে, যা প্যারিস চুক্তির সুস্পষ্ট লংঘন।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান দুটি উদ্দেশ্যের কথা উলে­খ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের প্রেক্ষাপটে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এনএইচআরসি) ম্যান্ডেট ও কার্যপরিধি গঠন এবং স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতার বিশ্লেষণ। দ্বিতীয়ত প্রস্তাবিত খসড়াকে অধিকতর কার্যকর করার জন্য পরামর্শ দেওয়া, যাতে অধ্যাদেশটিকে নির্ভরযোগ্য অনুসন্ধানী ক্ষমতা প্রয়োগ, ভুক্তভোগী ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা প্রদান এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ম্যান্ডেট দ্বারা সমৃদ্ধ করা যায়।