ঢাকা , সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
মেহেরপুরে খোকসা যুব সংঘের কমিটি গঠন: সভাপতি হামিদুল, সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা নাটোরে জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি-জাতীয় পার্টির ৫০ নেতাকর্মী বরিশালে জামায়াত নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা মেহেরপুরে পদ্মফুল তুলতে গিয়ে একই পরিবারের চার শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু বিএনপির পাঁচ নেতাকে সব পদ থেকে বহিষ্কার ‘ফজু পাগলা’ উপাধিতে গর্বিত বিএনপি প্রার্থী ফজলুর রহমান: বলেন, আমার জন্য সারা দেশের মানুষ পাগল গৌরীপুরে সংঘর্ষের জেরে বিএনপির ৫ নেতা বহিষ্কার জিয়া পরিবারের আদর্শ ধরে রাখতে জীবন দিতেও পিছু হটবো না: এস এম জাহাঙ্গীর শাপলাকলি’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে এনসিপি: জনগণের রাজনীতি গড়ে তুলতে আহ্বান নাহিদ ইসলামের গৌরীপুরে বিএনপির মনোনয়ন দ্বন্দ্বে সংঘর্ষ: নিহত ১, আহত অন্তত ৪০

দিল্লিতে শেখ হাসিনার মন্তব্যে হতাশ কলকাতার আওয়ামী নেতারা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৭:২৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৭৯৭ বার পড়া হয়েছে

‘স্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও হুংকারের অভাব’—ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে ক্ষোভ-বিভাজন প্রকাশ

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে অবস্থান করে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে স্পষ্ট দিকনির্দেশনার অভাবে গভীর হতাশায় পড়েছেন কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তাদের মতে, নেত্রীর বক্তব্যে দলের ভবিষ্যৎ কৌশল সম্পর্কে কোনো পরিষ্কার বার্তা পাওয়া যায়নি; বরং ‘হুংকারের’ ঘাটতি দলীয় মনোবল আরো দুর্বল করেছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার কলকাতার নিউ টাউনের শাপুরজিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে উপস্থিত নেতারা শেখ হাসিনার কাছ থেকে একটি স্পষ্ট ও শক্ত নির্দেশনা আশা করলেও, তেমন কিছু না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। তাদের প্রত্যাশা ছিল—নেত্রী কোনো ‘বড় ধরনের হুংকার’ দিয়ে দলকে চাঙা করবেন এবং ‘প্রত্যাবর্তন আন্দোলনের’ রূপরেখা ঘোষণা করবেন।

কিন্তু একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে ই-মেইলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি দিল্লিতে ‘বেশ মুক্ত অবস্থায়’ আছেন এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হলে দেশে ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই। এই বক্তব্যে দলীয় নেতাদের মধ্যে হতাশা আরও গভীর হয়। একাধিক সূত্র জানায়, বৈঠকে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন—‘আর কতদিন এভাবে বসে থাকব?’

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের ভয়াবহতা স্বীকার করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বৈঠকে দলের অভ্যন্তরে বিভাজনও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কেউ কেউ মত দেন, বর্তমান অবস্থায় যদি শেখ হাসিনা দলকে সক্রিয় নেতৃত্ব দিতে না পারেন, তবে বিকল্প নেতৃত্বের প্রয়োজন হতে পারে।

অন্যদিকে শেখ হাসিনা তার সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছেন, তিনি কেবল বৈধ ও সাংবিধানিক সরকারের অধীনে দেশে ফিরবেন। আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচনের অধীনে তিনি দেশে ফেরার প্রশ্নই ওঠে না। এ বক্তব্যে কলকাতায় থাকা নেতাদের মধ্যে নতুন করে হতাশা দেখা দিয়েছে।

তবে সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা পেলে তিনি ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আওয়ামী লীগ বয়কট করবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
এই অবস্থায় কলকাতায় অবস্থানরত আওয়ামী নেতাদের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে—দল কি এখন কৌশল বদলাবে, নাকি অপেক্ষার পথেই থাকবে?
ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও এর কোনো স্পষ্ট সমাধান পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মেহেরপুরে খোকসা যুব সংঘের কমিটি গঠন: সভাপতি হামিদুল, সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা

দিল্লিতে শেখ হাসিনার মন্তব্যে হতাশ কলকাতার আওয়ামী নেতারা

আপডেট সময় ০৭:২৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

‘স্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও হুংকারের অভাব’—ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে ক্ষোভ-বিভাজন প্রকাশ

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে অবস্থান করে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে স্পষ্ট দিকনির্দেশনার অভাবে গভীর হতাশায় পড়েছেন কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তাদের মতে, নেত্রীর বক্তব্যে দলের ভবিষ্যৎ কৌশল সম্পর্কে কোনো পরিষ্কার বার্তা পাওয়া যায়নি; বরং ‘হুংকারের’ ঘাটতি দলীয় মনোবল আরো দুর্বল করেছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার কলকাতার নিউ টাউনের শাপুরজিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে উপস্থিত নেতারা শেখ হাসিনার কাছ থেকে একটি স্পষ্ট ও শক্ত নির্দেশনা আশা করলেও, তেমন কিছু না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। তাদের প্রত্যাশা ছিল—নেত্রী কোনো ‘বড় ধরনের হুংকার’ দিয়ে দলকে চাঙা করবেন এবং ‘প্রত্যাবর্তন আন্দোলনের’ রূপরেখা ঘোষণা করবেন।

কিন্তু একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে ই-মেইলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি দিল্লিতে ‘বেশ মুক্ত অবস্থায়’ আছেন এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হলে দেশে ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই। এই বক্তব্যে দলীয় নেতাদের মধ্যে হতাশা আরও গভীর হয়। একাধিক সূত্র জানায়, বৈঠকে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন—‘আর কতদিন এভাবে বসে থাকব?’

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের ভয়াবহতা স্বীকার করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বৈঠকে দলের অভ্যন্তরে বিভাজনও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কেউ কেউ মত দেন, বর্তমান অবস্থায় যদি শেখ হাসিনা দলকে সক্রিয় নেতৃত্ব দিতে না পারেন, তবে বিকল্প নেতৃত্বের প্রয়োজন হতে পারে।

অন্যদিকে শেখ হাসিনা তার সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছেন, তিনি কেবল বৈধ ও সাংবিধানিক সরকারের অধীনে দেশে ফিরবেন। আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচনের অধীনে তিনি দেশে ফেরার প্রশ্নই ওঠে না। এ বক্তব্যে কলকাতায় থাকা নেতাদের মধ্যে নতুন করে হতাশা দেখা দিয়েছে।

তবে সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা পেলে তিনি ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আওয়ামী লীগ বয়কট করবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
এই অবস্থায় কলকাতায় অবস্থানরত আওয়ামী নেতাদের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে—দল কি এখন কৌশল বদলাবে, নাকি অপেক্ষার পথেই থাকবে?
ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও এর কোনো স্পষ্ট সমাধান পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।