ঢাকা , শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
মিশরের উদ্দেশ্যে এনসিপি নেতা সারজিস আলম  সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাঁজা বিক্রি করতে নিষেধ করায় খুন হন ছাত্রদল নেতা সাম্য বাংলাদেশ সীমান্তের পাশে শিলিগুঁড়ি করিডরে তিন সেনা ঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত আগামী ১৫ নভেম্বর বদলে যাচ্ছে পুলিশ ইউনিফর্ম! সরাসরি করাচি-চট্টগ্রাম শিপিং চালু করলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ‘ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান’ বিএনপির সঙ্গে জোট নয়, একক নির্বাচনের চিন্তা এনসিপির ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি মনোনয়ন না পেয়ে ধানক্ষেতে ‘রিভিউ’ দেখালেন বিএনপি নেতা নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে দেশের মানুষ রাখাল রাজা শহীদ জিয়ার দলকেই বিজয়ী করবে: শিমুল বিশ্বাস

যুদ্ধের অর্থনীতি চালিয়ে যাচ্ছে সুদানের সংঘাত — সোনা, অস্ত্র ও বহিরাগত পৃষ্ঠপোষকরা দিচ্ছে জীবনভর দায়

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১১:০৬:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৪৭ বার পড়া হয়েছে

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মিডল ইস্ট মনিটরের এক নিবন্ধে মুহাম্মদ শাহজিব হাসান বলেন, সুদানে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে 이어 আসা সহিংসতাকে কেবল ‘অবিশৃঙ্খলা’ বা ‘কূটনীতির ব্যর্থতা’ ধরে নেওয়া ভুল — প্রকৃতপক্ষে এটি একটি গভীর রাজনৈতিক অর্থনীতির ফল, যেখানে সামরিক শক্তি, অবৈধ খনিজ বাণিজ্য ও বহিরাগত পৃষ্ঠপোষকরা সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করে লাভান্বিত হচ্ছে, আর বেসামরিক জনগণ দিচ্ছে মানবিক মূল্য।

২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানের দু’টি শক্তিশালী বাহিনী — সুদানী সশস্ত্র বাহিনী (এসএসএফ) ও আধাসামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) — সরাসরি সংঘাতে লিপ্ত হয়। প্রথম দেখা যায় যেন হঠাৎ আক্রমণ শুরু হয়েছে; কিন্তু নিবন্ধকার উল্লেখ করেন যে, বাস্তবে এটি দীর্ঘদিন ধরে গঠিত অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা নেটওয়ার্কের স্বাভাবিক ফলাফল ছিল। আরএসএফ কেবল মিলিশিয়া নয়—এটি এখন একটি বিত্তবান অর্থনৈতিক শক্তি, যার হাতে সোনা খনন ও অন্যান্য বাণিজ্যক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের স্বাধীন তদন্তে আরএসএফের নিয়ন্ত্রিত সোনার উৎপাদন প্রায় ১০ টন ধরা পড়ে; এই আয় অস্ত্র ক্রয়, সৈন্যদের বেতন এবং সংঘাত বজায় রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে সংঘাতকে প্রতিস্থিরত রাখা সহজ হচ্ছে এবং শান্তি উদ্যোগগুলো দুর্বল হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি বহিরাগত পৃষ্ঠপোষকদের মাধ্যমে উন্নত অস্ত্র, ড্রোন ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা বেসামরিক এলাকা ও হাসপাতাল–স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে লক্ষ্যবস্তু করে আরও ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলছে।

ফলাফল মর্মকর: হাজার হাজার নিহত, প্রায় এক কোটি মানুষেরও বেশি বাস্তুচ্যুত — সুদানকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি সংকটগুলোর একে পরিণত করেছে এই সংঘাত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইঙ্গিত করেছে যে, চিকিৎসা সেবা বারবার আক্রমণের কারণে ব্রেকডাউন পর্যায়ে পৌঁছেছে, জরুরি সেবা কার্যত বন্ধপ্রায়।

নিবন্ধকার এবং বিশ্লেষকরা জোর দিয়ে বলছেন—মানবিক সহায়তা জরুরি হলেও তা যথেষ্ট নয়। স্থায়ী শান্তির জন্য এটি অপরিহার্য যে যুদ্ধের অর্থনীতির রক্তসঞ্চালন বন্ধ করা হবে: আন্তর্জাতিক স্তরে কঠোর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, অবৈধ সোনা ও খনিজ রপ্তানির প্রতিরোধ, সম্পদ জব্দ, এবং অস্ত্র–অর্থ পরিবহনের অবৈধ রুটগুলো ভাঙতে হবে। তৎপরতা ছাড়া রাজনীতি বা দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেলেও স্বার্থান্বেষী নেটওয়ার্কগুলোই আগুনে বারুদ জোগাবে।

সংক্ষেপে—সুদানের ট্র্যাজেডি কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়; এটি এমন এক ব্যবস্থার ফল যেখানে সহিংসতাই আয় উপার্জনের পথ। নিবন্ধকারের মতে, যুদ্ধের অর্থনীতি ধ্বংস করে জবাবদিহিমূলক প্রশাসন ও নিয়ন্ত্রিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা ছাড়া সুদানে টেকসই শান্তি নিয়ে আসা যাবে না।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মিশরের উদ্দেশ্যে এনসিপি নেতা সারজিস আলম 

যুদ্ধের অর্থনীতি চালিয়ে যাচ্ছে সুদানের সংঘাত — সোনা, অস্ত্র ও বহিরাগত পৃষ্ঠপোষকরা দিচ্ছে জীবনভর দায়

আপডেট সময় ১১:০৬:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মিডল ইস্ট মনিটরের এক নিবন্ধে মুহাম্মদ শাহজিব হাসান বলেন, সুদানে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে 이어 আসা সহিংসতাকে কেবল ‘অবিশৃঙ্খলা’ বা ‘কূটনীতির ব্যর্থতা’ ধরে নেওয়া ভুল — প্রকৃতপক্ষে এটি একটি গভীর রাজনৈতিক অর্থনীতির ফল, যেখানে সামরিক শক্তি, অবৈধ খনিজ বাণিজ্য ও বহিরাগত পৃষ্ঠপোষকরা সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করে লাভান্বিত হচ্ছে, আর বেসামরিক জনগণ দিচ্ছে মানবিক মূল্য।

২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানের দু’টি শক্তিশালী বাহিনী — সুদানী সশস্ত্র বাহিনী (এসএসএফ) ও আধাসামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) — সরাসরি সংঘাতে লিপ্ত হয়। প্রথম দেখা যায় যেন হঠাৎ আক্রমণ শুরু হয়েছে; কিন্তু নিবন্ধকার উল্লেখ করেন যে, বাস্তবে এটি দীর্ঘদিন ধরে গঠিত অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা নেটওয়ার্কের স্বাভাবিক ফলাফল ছিল। আরএসএফ কেবল মিলিশিয়া নয়—এটি এখন একটি বিত্তবান অর্থনৈতিক শক্তি, যার হাতে সোনা খনন ও অন্যান্য বাণিজ্যক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের স্বাধীন তদন্তে আরএসএফের নিয়ন্ত্রিত সোনার উৎপাদন প্রায় ১০ টন ধরা পড়ে; এই আয় অস্ত্র ক্রয়, সৈন্যদের বেতন এবং সংঘাত বজায় রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে সংঘাতকে প্রতিস্থিরত রাখা সহজ হচ্ছে এবং শান্তি উদ্যোগগুলো দুর্বল হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি বহিরাগত পৃষ্ঠপোষকদের মাধ্যমে উন্নত অস্ত্র, ড্রোন ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা বেসামরিক এলাকা ও হাসপাতাল–স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে লক্ষ্যবস্তু করে আরও ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলছে।

ফলাফল মর্মকর: হাজার হাজার নিহত, প্রায় এক কোটি মানুষেরও বেশি বাস্তুচ্যুত — সুদানকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি সংকটগুলোর একে পরিণত করেছে এই সংঘাত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইঙ্গিত করেছে যে, চিকিৎসা সেবা বারবার আক্রমণের কারণে ব্রেকডাউন পর্যায়ে পৌঁছেছে, জরুরি সেবা কার্যত বন্ধপ্রায়।

নিবন্ধকার এবং বিশ্লেষকরা জোর দিয়ে বলছেন—মানবিক সহায়তা জরুরি হলেও তা যথেষ্ট নয়। স্থায়ী শান্তির জন্য এটি অপরিহার্য যে যুদ্ধের অর্থনীতির রক্তসঞ্চালন বন্ধ করা হবে: আন্তর্জাতিক স্তরে কঠোর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা, অবৈধ সোনা ও খনিজ রপ্তানির প্রতিরোধ, সম্পদ জব্দ, এবং অস্ত্র–অর্থ পরিবহনের অবৈধ রুটগুলো ভাঙতে হবে। তৎপরতা ছাড়া রাজনীতি বা দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেলেও স্বার্থান্বেষী নেটওয়ার্কগুলোই আগুনে বারুদ জোগাবে।

সংক্ষেপে—সুদানের ট্র্যাজেডি কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়; এটি এমন এক ব্যবস্থার ফল যেখানে সহিংসতাই আয় উপার্জনের পথ। নিবন্ধকারের মতে, যুদ্ধের অর্থনীতি ধ্বংস করে জবাবদিহিমূলক প্রশাসন ও নিয়ন্ত্রিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা ছাড়া সুদানে টেকসই শান্তি নিয়ে আসা যাবে না।