ঢাকা , রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
দেশে বিএনপির হাত ধরে বারবার গণতন্ত্র এসেছে: অ্যাটর্নি জেনারেল বাংলাদেশ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না: ছারছীনা পীর সাহেব হামলার প্রতিবাদে গভীর রাতে শহিদ মিনারে শিক্ষকদের মোমবাতি প্রজ্বলন ২০২৬ সালের রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষকদের পাশে থাকার ঘোষণা হাসনাত আবদুল্লাহর মধ্যরাতে ঢাকা গাজীপুর খুলনা সহ একযোগে ১৫ জেলার ডিসি বদল জয়পুরহাটে জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির অর্ধশতাধিক কর্মী-সমর্থক চেতনানাশক খাইয়ে সিএনজি ছিনতাই চক্রের নয় সদস্য গ্রেপ্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে কেনো প্রতিবার অবহেলা— প্রশ্ন রুমিন ফারহানার খুলনায় দুই সাংবাদিকের উপর হামলা; স্থানীয় সাংবাদিক মহলের নিন্দা

বিএনপিতে ফিরছেন বহিষ্কৃত নেতারা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১১:০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫
  • ৭৯১ বার পড়া হয়েছে

এবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মেজাজ বেশ ফুরফুরে ছিল। তবে পরে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। এ কারণে দল থেকে সাংগঠনিক অভিযানে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় সাত হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু এখন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বহিষ্কৃত নেতাদের অনেককেই আবার দলে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দলীয় সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময়ে বহিষ্কৃত অনেক নেতা দলে ফিরতে আবেদন করেছেন। ধীরে ধীরে এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করে এবং তৃণমূলে কর্মীদের পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়ে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হচ্ছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে বহিষ্কৃত এসব নেতাদের বড় অংশকেই দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের পর দলের প্রায় সাত হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাদের অনেককে বহিষ্কার করা হয়, কারও পদ স্থগিত রাখা হয়। এখন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বহিষ্কৃতদের মধ্য থেকে ‘আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ও মাঠপর্যায়ে প্রভাবশালী’ নেতাদের দলে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে দলীয় হাইকমান্ড। বিএনপির দপ্তর সংশ্লিষ্ট একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নানা অপরাধে যাদের বিরুদ্ধে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছিল তাদের বেশির ভাগই পদ ফিরে পেতে আবেদন করেছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করে অনেকের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।

দলীয় সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে সম্প্রতি বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের একাধিক নেতার বহিষ্কাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অসদাচরণের অভিযোগে আগে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল তাদের আবেদন ও বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত সোমবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক দিদারুল আলম মিয়াজী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রিয়াদ আরফান সরকার রানার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাদের প্রাথমিক সদস্য পদ পুনর্বহাল করা হয়েছে।

একইভাবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত আরও সাত নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তারা হলেন- ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল উদ্দিন সরকার পাপ্পু, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন দুলাল, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী এবং রংপুর জেলার সাবেক সদস্য মোকাররম হোসেন সুজন ও মো. আলি সরকার।

গত বুধবার দলের দপ্তর থেকে জানানো হয়, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য ও নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির সদস্য ছাবির আহমদ চৌধুরীর প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই দিনের আরেক বিজ্ঞপ্তিতে গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আব্দুল হালিম মোল্লার বহিষ্কারাদেশও প্রত্যাহার করে প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিএনপি সূত্র বলছে, এসব নেতার আবেদনের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে ইতিবাচক ভূমিকা বিবেচনা করে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সামনে এ তালিকা আরও বড় হবে বলেই জানাচ্ছে দলীয় সূত্রগুলো।

এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কুকে গত রবিবার সকালে গুলশানে নিজ বাসায় ডেকে পাঠান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় সাক্কু কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি মহাসচিবকে অবহিত করেন এবং স্থানীয় সাংগঠনিক পুনর্গঠনের বিষয়ে কথা বলেন। জানা গেছে, বিএনপির পক্ষ থেকে সাক্কুকে আগামী নির্বাচনে কুমিল্লা সদর আসনে দল মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়। সাক্কু অবশ্য কিছুটা অপরাগতাই প্রকাশ করেন। নিজে নির্বাচন না করলে স্থানীয় বিএনপি নেতা মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে কাজ করবেন বলে জানান।

জানতে চাইলে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমি কুমিল্লার আদি বিএনপি। এখন যারা মাঠে সক্রিয়, তাদের অনেকেই আমার জুনিয়র। মহাসচিবের সঙ্গে কুমিল্লার সামগ্রিক রাজনৈতিক চিত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের মে মাসে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাক্কুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছিল বিএনপি। তবে দল থেকে দূরে না সরে তিনি সব কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। কুমিল্লার রাজনীতিতে এখনো তাকে গুরুত্বপূর্ণ ‘ফ্যাক্টর’ বলে মনে করেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে খুলনা জেলা ও মহানগর কমিটি গঠন নিয়ে দলের সিদ্ধান্তে আপত্তি তোলায় নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে।

দল থেকে অব্যাহতির পরও নজরুল ইসলাম মঞ্জু খুলনায় সমাবেশসহ বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে অংশ নিচ্ছিলেন। জানা গেছে, দলে ফিরতে একাধিকবার আবেদন করলেও কেন্দ্র থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। তবে সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে ডাক পড়েছিল তারও। নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, একজন মাঠের কর্মী হিসেবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে ডাক দিয়েছেন এতে তার প্রতি কৃতজ্ঞ। পরিস্থিতি যেমনই হোক, মাঠে ছিলাম, এখনো আছি। আসছে নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। দলের নির্দেশনা নিয়ে আবারও মাঠে নামতে হবে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

দেশে বিএনপির হাত ধরে বারবার গণতন্ত্র এসেছে: অ্যাটর্নি জেনারেল

বিএনপিতে ফিরছেন বহিষ্কৃত নেতারা

আপডেট সময় ১১:০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

এবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মেজাজ বেশ ফুরফুরে ছিল। তবে পরে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। এ কারণে দল থেকে সাংগঠনিক অভিযানে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় সাত হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু এখন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বহিষ্কৃত নেতাদের অনেককেই আবার দলে ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দলীয় সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময়ে বহিষ্কৃত অনেক নেতা দলে ফিরতে আবেদন করেছেন। ধীরে ধীরে এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করে এবং তৃণমূলে কর্মীদের পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়ে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হচ্ছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে বহিষ্কৃত এসব নেতাদের বড় অংশকেই দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের পর দলের প্রায় সাত হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাদের অনেককে বহিষ্কার করা হয়, কারও পদ স্থগিত রাখা হয়। এখন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বহিষ্কৃতদের মধ্য থেকে ‘আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ও মাঠপর্যায়ে প্রভাবশালী’ নেতাদের দলে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে দলীয় হাইকমান্ড। বিএনপির দপ্তর সংশ্লিষ্ট একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নানা অপরাধে যাদের বিরুদ্ধে দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছিল তাদের বেশির ভাগই পদ ফিরে পেতে আবেদন করেছেন। এগুলো যাচাই-বাছাই করে অনেকের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।

দলীয় সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে সম্প্রতি বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের একাধিক নেতার বহিষ্কাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অসদাচরণের অভিযোগে আগে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল তাদের আবেদন ও বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত সোমবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার বারইয়ারহাট পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক দিদারুল আলম মিয়াজী ও সৈয়দপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রিয়াদ আরফান সরকার রানার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাদের প্রাথমিক সদস্য পদ পুনর্বহাল করা হয়েছে।

একইভাবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত আরও সাত নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তারা হলেন- ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল উদ্দিন সরকার পাপ্পু, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন দুলাল, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী এবং রংপুর জেলার সাবেক সদস্য মোকাররম হোসেন সুজন ও মো. আলি সরকার।

গত বুধবার দলের দপ্তর থেকে জানানো হয়, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য ও নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির সদস্য ছাবির আহমদ চৌধুরীর প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই দিনের আরেক বিজ্ঞপ্তিতে গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আব্দুল হালিম মোল্লার বহিষ্কারাদেশও প্রত্যাহার করে প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিএনপি সূত্র বলছে, এসব নেতার আবেদনের পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে ইতিবাচক ভূমিকা বিবেচনা করে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সামনে এ তালিকা আরও বড় হবে বলেই জানাচ্ছে দলীয় সূত্রগুলো।

এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কুকে গত রবিবার সকালে গুলশানে নিজ বাসায় ডেকে পাঠান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় সাক্কু কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি মহাসচিবকে অবহিত করেন এবং স্থানীয় সাংগঠনিক পুনর্গঠনের বিষয়ে কথা বলেন। জানা গেছে, বিএনপির পক্ষ থেকে সাক্কুকে আগামী নির্বাচনে কুমিল্লা সদর আসনে দল মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়। সাক্কু অবশ্য কিছুটা অপরাগতাই প্রকাশ করেন। নিজে নির্বাচন না করলে স্থানীয় বিএনপি নেতা মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষে কাজ করবেন বলে জানান।

জানতে চাইলে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমি কুমিল্লার আদি বিএনপি। এখন যারা মাঠে সক্রিয়, তাদের অনেকেই আমার জুনিয়র। মহাসচিবের সঙ্গে কুমিল্লার সামগ্রিক রাজনৈতিক চিত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের মে মাসে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাক্কুকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছিল বিএনপি। তবে দল থেকে দূরে না সরে তিনি সব কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। কুমিল্লার রাজনীতিতে এখনো তাকে গুরুত্বপূর্ণ ‘ফ্যাক্টর’ বলে মনে করেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে খুলনা জেলা ও মহানগর কমিটি গঠন নিয়ে দলের সিদ্ধান্তে আপত্তি তোলায় নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে।

দল থেকে অব্যাহতির পরও নজরুল ইসলাম মঞ্জু খুলনায় সমাবেশসহ বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে অংশ নিচ্ছিলেন। জানা গেছে, দলে ফিরতে একাধিকবার আবেদন করলেও কেন্দ্র থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। তবে সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে ডাক পড়েছিল তারও। নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, একজন মাঠের কর্মী হিসেবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যে ডাক দিয়েছেন এতে তার প্রতি কৃতজ্ঞ। পরিস্থিতি যেমনই হোক, মাঠে ছিলাম, এখনো আছি। আসছে নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। দলের নির্দেশনা নিয়ে আবারও মাঠে নামতে হবে।