ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে এ বছরের অন্যতম শক্তিশালী টাইফুন ‘কালমেগি’র আঘাতে অন্তত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। টাইফুনের প্রভাবে লাখো মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হতে হয়েছে। খবর বিবিসির।
মঙ্গলবার ভোরে আঘাত হানা টাইফুনটি ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে, যার সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে মধ্যাঞ্চলের জনবহুল দ্বীপ সেবুতে। এখানেই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এবং এখনও অন্তত ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, মানুষ ছাদে আশ্রয় নিচ্ছে এবং রাস্তা জুড়ে ভেসে যাচ্ছে গাড়ি ও শিপিং কন্টেইনার।
এরই মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করতে গিয়ে আগুসান দেল সুর এলাকায় একটি সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ছয়জন ক্রু নিহত হয়েছেন। বিমান বাহিনী জানিয়েছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে উদ্ধার অভিযান শুরু হয় এবং পরে ছয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়ভাবে ‘তিনো’ নামে পরিচিত এই টাইফুনটি বর্তমানে দুর্বল হলেও এখনও ঘণ্টায় প্রায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। এটি বুধবারের মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরে প্রবেশ করবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
সেবুর গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো জানিয়েছেন, “সেবুর পরিস্থিতি সত্যিই অভূতপূর্ব। আমরা ভেবেছিলাম বাতাসই সবচেয়ে বিপজ্জনক হবে, কিন্তু জলোচ্ছ্বাসই আসল বিপদে ফেলেছে আমাদের মানুষদের।” তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেবুতে ‘স্টেট অব ক্যালামিটি’ বা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।
অধিকাংশ মৃত্যুই হয়েছে ডুবে যাওয়ার কারণে। পাহাড়ি ঢাল বেয়ে নেমে আসা কাদা-পানির স্রোতে শহর ও গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উদ্ধারকারী দলগুলো নৌকা নিয়ে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে ব্যস্ত।
সেবু সিটির ২৮ বছর বয়সী বাসিন্দা ডন দেল রোসারিও বলেন, “আমি এখানে জন্মেছি, কিন্তু এমন ভয়াবহতা কখনও দেখিনি।”
ফিলিপাইনের অফিস অব সিভিল ডিফেন্সের উপপ্রশাসক রাফায়েলাইটো আলেজান্দ্রো জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে প্রায় ৪ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দেশটিতে প্রতি বছর গড়ে ২০টিরও বেশি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। গত এক মাসেই দুটি শক্তিশালী টাইফুন—‘রাগাসা’ ও ‘বুয়ালোই’—মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছিল।
এবারের ‘কালমেগি’ ফিলিপাইন পেরিয়ে ভিয়েতনামের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে ইতোমধ্যেই রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

ডেস্ক রিপোর্ট 

























