ঢাকা , বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
ক্লাসে ঢুকে ডাস্টার দিয়ে ছাত্রীকে মেরে মাথা ফাটালেন শিক্ষক বোরকা ছাড়া হাসপাতালে প্রবেশের অনুমতি নেই আফগান নারীদের ড. ইউনূস সরকার হ’টা’নোর পরিকল্পনা নিয়ে হাসিনা-পুতুলের ত’র্কাত’র্কি লকডাউন নিয়ে বিভক্ত আ.লীগ, হামলার ছক কষছে এক পক্ষ রাজশাহীতে টায়ারে আগুন দিতে গিয়ে দগ্ধ ছাত্রদল নেতা শহীদুল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ঢাকায় ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন, ‘লকডাউন’ ঘিরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি দিল্লিতে শেখ হাসিনার গোপন বৈঠক: দেশ destabilize করার পরিকল্পনা ফাঁস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ স্থাপনায় তালা ঝুলিয়ে ‘লকডাউন সফল’ আহ্বান ছাত্রলীগের 🇸🇦 ২০২৬ সালের হজচুক্তি স্বাক্ষরিত: বাংলাদেশ থেকে ৭৮ হাজার ৫০০ জন হজ পালন করবেন ১৩ নভেম্বর কী হবে ঢাকায়, চিন্তায় কলকাতার আ.লীগ নেতারাও

৭২ বছর বয়সে সেফ এক্সিট ভাবা দুঃখজনক: সড়ক উপদেষ্টা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১১:৪৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৩৮ বার পড়া হয়েছে

৭২ বছর বয়সে যদি আমাকে সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে তার ফেসবুক প্রোফাইলে ‘উপদেষ্টার রোজনামচা, চালকের হেলমেট নাই, ও সেফ এক্সিট’ শিরোনামে করা এক পোস্টে এ কথা লিখেন তিনি। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান লিখেন, ‘গতকাল আমি সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনযোগে ভৈরব যাই। আমার সঙ্গে ছিলেন যাতায়াত খাত বিশেষজ্ঞ ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. মইনুদ্দিন, রেল ও সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী, জেলা ও উপজেলা পরিষদ ও পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ।’

‘ট্রেনে ওঠার আগে কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন করি ও ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করি। দশটা পনের মিনিটে ভৈরব পৌঁছাই ও সেখান থেকে গাড়িতে গিয়ে “আশুগঞ্জ” ট্রেন স্টেশন পরিদর্শন করি। সেখানে পৌঁছে বিএনপি, জামায়াতসহ স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলি। তাদের দাবি স্টেশনটিকে পূর্বের ন্যায় বি-শ্রেণিভুক্ত করতে হবে। স্টেশনটির বেহাল অবস্থা। উঁচুতে অবস্থিত স্টেশনটিতে নারী ও বয়োবৃদ্ধদের ওঠার ব্যবস্থা কঠিন। সিগন্যালিংসহ স্টেশনটির অন্যান্য ত্রুটি নিরসন ও দীর্ঘমেয়াদে কী করা যায় সে বিষয়ে রেলের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিই,’ বলেও লিখেন তিনি।

মোটরসাইকেল চালকের হেলমেট না থাকা প্রসঙ্গে তিনি লিখেন, ‘সেখান থেকে সরাইলের পথে রওনা হই। সাত/আট কিলোমিটার পথে এক ঘণ্টা অবস্থানের পরেও অগ্রগতি না হওয়ায় প্রথমে পায়ে হেঁটে ও পরে মোটরসাইকেলযোগে রওনা দিই। মোটরসাইকেল খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, চালক কিংবা যাত্রী কারোরই হেলমেট নাই। আট-দশটা মোটরবাইক খুঁজে একটিমাত্র হেলমেট পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি ও অপেক্ষার পরও চালকের জন্য হেলমেট না পেয়ে সবার পরামর্শে একমাত্র হেলমেটটি নিজে পরে রওনা দেই। হেলমেটবিহীন বাইকচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে পরামর্শ ও বিআরটিএ, জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি।’

সরাইল বিশ্বরোডে যানজট প্রসঙ্গে তিনি লিখেন, ‘যানজটের মূল কারণ সরাইল চৌরাস্তার নির্মাণকাজ হলেও, পথে দেখতে পাই যে মূলত চালকদের শৃঙ্খলাবোধ ও হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থাপনার অভাবে যাত্রায় বিলম্ব ঘটছে। উল্লেখ্য, ভারতীয় ঋণে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের ঠিকাদার চলে যাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের ফিরিয়ে এনে এখন পুনরায় কাজ শুরু করা হয়েছে। দুই লেনের মূল রাস্তার ডানপাশে দুই লেন ও বামপাশে একটি সার্ভিস লেন আছে। যেগুলোর যথাযথ ব্যবহার করা হলে এত যানজট হওয়ার কথা নয়। মূল রাস্তার দুই পাশে ডিভাইডার স্থানে স্থানে ভেঙে ফেলেছে। পাশ থেকে গাড়ি উঠে দুই লেন কোথাও তিন-চার লেনে পরিণত হয়েছে। ফলে সবাই আগে যেতে চাচ্ছে, কেউই আগাতে পারছে না। হাইওয়ে পুলিশ তৎপর থাকলে এটা হতো না। এ বিষয়ে পুলিশের আইজিপির সঙ্গে কথা হয়েছে, আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবো।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার বিষয়ে ছয়টি পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোপূর্বেই নির্মাণকাজ তদারকির জন্য অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ ১২ জন কর্মকর্তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পদস্থ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত এ রাস্তায় চলাচল প্রায় স্বাভাবিক হবে,’ বলে লিখেন তিনি। ‘ফেরার পথে এক সাংবাদিক উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট বিষয়ে আমার মন্তব্য জানতে চেয়েছেন। এ বিষয়টি উত্থাপনকারী, প্রাক্তন উপদেষ্টা ও বর্তমান এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন ও জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনা হিসেবে শ্রদ্ধার পাত্র। তাই তার বক্তব্যের ওপর আমার মন্তব্য করা শোভন নয়। তাছাড়া আমি রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো মন্তব্য করি না।’

তিনি লিখেন, ‘উপদেষ্টা হিসেবে যোগদানের পর থেকে আমার রোজনামচা এমনই। গতকালও রাত আটটায় বাসায় ফিরেছি। নিজে পদে থেকে অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করিনি। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কাউকে ব্যবসা বা চাকরি দেই নাই। নিজের সীমিত সামর্থ্যের সবটুকু ব্যবহার করে জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালন করেছি। ইতোপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার নিশ্চিত সুযোগ গ্রহণ করিনি।’ দুঃখ প্রকাশ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান লিখেন, ‘তাই, আজ ৭২+ বছর বয়সে আমাকে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয়!!!’

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ক্লাসে ঢুকে ডাস্টার দিয়ে ছাত্রীকে মেরে মাথা ফাটালেন শিক্ষক

৭২ বছর বয়সে সেফ এক্সিট ভাবা দুঃখজনক: সড়ক উপদেষ্টা

আপডেট সময় ১১:৪৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

৭২ বছর বয়সে যদি আমাকে সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে তার ফেসবুক প্রোফাইলে ‘উপদেষ্টার রোজনামচা, চালকের হেলমেট নাই, ও সেফ এক্সিট’ শিরোনামে করা এক পোস্টে এ কথা লিখেন তিনি। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান লিখেন, ‘গতকাল আমি সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনযোগে ভৈরব যাই। আমার সঙ্গে ছিলেন যাতায়াত খাত বিশেষজ্ঞ ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. মইনুদ্দিন, রেল ও সড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী, জেলা ও উপজেলা পরিষদ ও পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ।’

‘ট্রেনে ওঠার আগে কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন করি ও ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করি। দশটা পনের মিনিটে ভৈরব পৌঁছাই ও সেখান থেকে গাড়িতে গিয়ে “আশুগঞ্জ” ট্রেন স্টেশন পরিদর্শন করি। সেখানে পৌঁছে বিএনপি, জামায়াতসহ স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলি। তাদের দাবি স্টেশনটিকে পূর্বের ন্যায় বি-শ্রেণিভুক্ত করতে হবে। স্টেশনটির বেহাল অবস্থা। উঁচুতে অবস্থিত স্টেশনটিতে নারী ও বয়োবৃদ্ধদের ওঠার ব্যবস্থা কঠিন। সিগন্যালিংসহ স্টেশনটির অন্যান্য ত্রুটি নিরসন ও দীর্ঘমেয়াদে কী করা যায় সে বিষয়ে রেলের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিই,’ বলেও লিখেন তিনি।

মোটরসাইকেল চালকের হেলমেট না থাকা প্রসঙ্গে তিনি লিখেন, ‘সেখান থেকে সরাইলের পথে রওনা হই। সাত/আট কিলোমিটার পথে এক ঘণ্টা অবস্থানের পরেও অগ্রগতি না হওয়ায় প্রথমে পায়ে হেঁটে ও পরে মোটরসাইকেলযোগে রওনা দিই। মোটরসাইকেল খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, চালক কিংবা যাত্রী কারোরই হেলমেট নাই। আট-দশটা মোটরবাইক খুঁজে একটিমাত্র হেলমেট পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি ও অপেক্ষার পরও চালকের জন্য হেলমেট না পেয়ে সবার পরামর্শে একমাত্র হেলমেটটি নিজে পরে রওনা দেই। হেলমেটবিহীন বাইকচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে পরামর্শ ও বিআরটিএ, জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি।’

সরাইল বিশ্বরোডে যানজট প্রসঙ্গে তিনি লিখেন, ‘যানজটের মূল কারণ সরাইল চৌরাস্তার নির্মাণকাজ হলেও, পথে দেখতে পাই যে মূলত চালকদের শৃঙ্খলাবোধ ও হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থাপনার অভাবে যাত্রায় বিলম্ব ঘটছে। উল্লেখ্য, ভারতীয় ঋণে বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের ঠিকাদার চলে যাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের ফিরিয়ে এনে এখন পুনরায় কাজ শুরু করা হয়েছে। দুই লেনের মূল রাস্তার ডানপাশে দুই লেন ও বামপাশে একটি সার্ভিস লেন আছে। যেগুলোর যথাযথ ব্যবহার করা হলে এত যানজট হওয়ার কথা নয়। মূল রাস্তার দুই পাশে ডিভাইডার স্থানে স্থানে ভেঙে ফেলেছে। পাশ থেকে গাড়ি উঠে দুই লেন কোথাও তিন-চার লেনে পরিণত হয়েছে। ফলে সবাই আগে যেতে চাচ্ছে, কেউই আগাতে পারছে না। হাইওয়ে পুলিশ তৎপর থাকলে এটা হতো না। এ বিষয়ে পুলিশের আইজিপির সঙ্গে কথা হয়েছে, আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবো।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার বিষয়ে ছয়টি পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোপূর্বেই নির্মাণকাজ তদারকির জন্য অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীসহ ১২ জন কর্মকর্তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পদস্থ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত এ রাস্তায় চলাচল প্রায় স্বাভাবিক হবে,’ বলে লিখেন তিনি। ‘ফেরার পথে এক সাংবাদিক উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট বিষয়ে আমার মন্তব্য জানতে চেয়েছেন। এ বিষয়টি উত্থাপনকারী, প্রাক্তন উপদেষ্টা ও বর্তমান এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন ও জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনা হিসেবে শ্রদ্ধার পাত্র। তাই তার বক্তব্যের ওপর আমার মন্তব্য করা শোভন নয়। তাছাড়া আমি রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো মন্তব্য করি না।’

তিনি লিখেন, ‘উপদেষ্টা হিসেবে যোগদানের পর থেকে আমার রোজনামচা এমনই। গতকালও রাত আটটায় বাসায় ফিরেছি। নিজে পদে থেকে অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করিনি। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব কাউকে ব্যবসা বা চাকরি দেই নাই। নিজের সীমিত সামর্থ্যের সবটুকু ব্যবহার করে জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালন করেছি। ইতোপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার নিশ্চিত সুযোগ গ্রহণ করিনি।’ দুঃখ প্রকাশ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান লিখেন, ‘তাই, আজ ৭২+ বছর বয়সে আমাকে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয়!!!’