অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনারা অনেক দূর তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, না হলে কিন্তু বিপদ হতে পারে। কোনও ঘটনায় আবেগ বশত সিদ্ধান্ত নিয়েন না। শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাত ও ওয়েলফেয়ার খাতে উদ্যোগ নিন।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষে এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল একজন মহীয়সী নারী ছিলেন। একজন ধনী পরিবারের মেয়ে হয়ে তিনি সমাজ কল্যাণ কাজে নেমে আসেন। তিনি মানুষের সেবার জন্য নার্সিং পেশা চালু করেন। তিনি শত্রু মিত্র সবার সেবা করেছেন।
তিনি বলেন, আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে সেটি রাজনৈতিক কারণে। সেখানে নার্সিংয়ের যে মহিমান্বিত রূপ যা মনোমুগ্ধকর। তাদের সেবার ভাষা আমি প্রকাশ করতে পারব না। পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সেবা, মায়ের সেবা। একজন নার্স মায়ের সেবা হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু আমাদের দেশে নার্সকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। তাদের প্রতি বৈষম্য দেখানো হয়। শুধু আমাদের দেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে এ অবস্থা। এমনকি নার্সদের আবাসন সুবিধা নেই। তাদের কাজের কারণে তিন শিফটেও কাজ করতে হয়। কিন্তু ক্যাম্পাসে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। নিজের বেতন থেকে বাসা ভাড়া দিতে হয়। আমাদের যেমন ভালো ডাক্তার দরকার, তেমনি নার্সদের যে লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার সেটি দিতে হবে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, উড়াল সেতু, মেগা প্রজেক্ট কি চিবিয়ে চিবিয়ে খাব নাকি? যে দেশের হিউম্যান উন্নতি হয় না, সে দেশ কখনও সামনে এগিয়ে যেতে পারে না। লুটপাট ও পাচার হওয়া টাকার অর্ধেক স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করলে দেশ উন্নতি লাভ করত। করণার সময় স্বাস্থ্যখাতে অনিময় করেছে, যার নায়ক দরবেশ এখন জেলে আছেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জানি না এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যখাত কিভাবে দেখবে, অথচ অত্যন্ত জরুরি এই সার্ভিসটা। কেন আমি ডলার খরচ করে ইন্ডিয়াতে যাব? কেন তাদের টাকা দিয়ে আসব? তারা প্রতিমুহূর্তে আমাদের নিয়ে নেগেটিভ বয়ান তৈরি করে অপপ্রচার করছে। তাদের পেছনে যদি এই আমরা ডলার খরচ না করে, এই টাকাগুলো যদি আমাদের নার্স-ডাক্তারদের পেছনে খরচ করি, তাহলে ইন্ডিয়ায় যাওয়ার তো কোনও কারণই থাকতে পারে না। ডাক্তারদের লজিস্টিক সাপোর্ট ঠিক করতে পারলেই তো কেউ ওই (ইন্ডিয়া) দিকে যেত না। সেই কাজ গুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে করা দরকার ছিল।
আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম, কাদের গণি চৌধুরী, জাহানারা পারভিন, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, জাহিদুল কবির, ছাত্রদলের সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।