মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত সোরোকা মেডিকেল সেন্টারে ইরানের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। এই হামলায় অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। এই ঘটনায় পুরো অঞ্চলে যুদ্ধের উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
ঘটনার পরপরই এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এই হামলার জন্য ইরানকে চড়া মূল্য দিতে হবে। আমাদের জনগণের রক্তপাত আমরা নীরবে মেনে নেব না। প্রতিক্রিয়া আসবেই।” তার এই মন্তব্য আসন্ন এক বড় ধরনের সামরিক সংঘাতের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোমবার সকালে ইরান প্রায় ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর দিকে ছুড়ে দেয়। যদিও আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব হয়, কিন্তু একটি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি সোরোকা হাসপাতালে আঘাত হানে। হামলার সময় হাসপাতালটি যুদ্ধাহত সেনা ও সাধারণ রোগীতে পূর্ণ ছিল।
এদিকে, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, এই হামলায় ইরান প্রথমবারের মতো ক্লাস্টার মিউনিশন (Cluster Munition) ব্যবহার করেছে। এই ধরনের বিধ্বংসী অস্ত্র আকাশে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় বিস্ফোরিত হয়ে অসংখ্য ছোট ছোট বোমা প্রায় ৮ কিলোমিটার (৫ মাইল) এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে দেয়। এর ফলে ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে একে আটকানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
নেতানিয়াহুর কঠোর হুঁশিয়ারি এবং ইরানের নতুন ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ পরিস্থিতিকে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্র: আল জাজিরা