ঢাকা , শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
সংবিধানে গণভোট নেই, কথায় কথায় রাস্তায় নামবেন না: আমীর খসরু হাসিনাকে প্রমোট করতে ভারত সর্বশক্তি ব্যবহার করছে: দাবি রনির মঞ্জু ভাই টাচ করে কথা বলা পছন্দ করতেন, শোল্ডার- হাতে ধরতো: বিস্ফোরক মন্তব্য সাবেক অধিনায়কের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের নাম সরিয়ে নিলো যুক্তরাষ্ট্র উন্মুক্ত মাঠে এবছরের সব তাফসির মাহফিল স্থগিত ঘোষণা করলেন মিজানুর রহমান আজহারী আরিফিন শুভর রাজউকের ১০ কাঠার প্লট ফিরিয়ে দিতে বললেন পরিচালক শেখ হাসিনা ও আ. লীগ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: প্রেসসচিব দুর্নীতি-দুঃশাসন মুক্তিতে কারও সাথে আপস করবে না জামায়াত: ডা. শফিকুর রহমান জবিতে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে জমকালো কাওয়ালি সন্ধ্যা দলগুলো না পারলে গণভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: প্রেস সচিব

তত্ত্বাবধায়ক ফিরলে সংসদের ক্ষমতাকে দুর্বল করবে: প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৫:০০:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • ৭৬৩ বার পড়া হয়েছে

এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরলে তা সংসদের ক্ষমতাকে দুর্বল করবে কিনা, এমন প্রশ্ন রেখেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বুধবার (২২ অক্টোবর) তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল বিভাগে দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে এ প্রশ্ন রাখেন প্রধান বিচারপতি। এদিন বদিউল আলম মজুমদারের আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিয়ে ১৪তম জাতীয় নির্বাচন থেকে তা কার্যকর চেয়ে আপিল বিভাগে শুনানি করেন।

এ সময় তিনি আপিল বিভাগকে বলেন, হাইকোর্ট থেকে আপিল বিভাগ পর্যন্ত মোট ১২ জন বিচারপতি এ মামলাটি শুনেছেন। কিন্তু এর মধ্যে ৮ জনই তা রাখার পক্ষে মত দেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকসহ চারজন তা বাতিল করতে বলেন। পরে আইনজীবী শরীফ ভুঁইয়া বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আপিল বিভাগ একটি গাইডলাইন করে দিতে পারে। প্রধান বিচারপতি বলেছেন— তত্ত্বাবধায়ক মামলার আপিল শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনো মামলার আপিল শুনানি হবে না। এটাই এখন সবচেয়ে বড় মামলা।

এর আগে ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের প্রথম দিনের শুনানি হয়। গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।

প্রসঙ্গত, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। এ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সংবিধানে গণভোট নেই, কথায় কথায় রাস্তায় নামবেন না: আমীর খসরু

তত্ত্বাবধায়ক ফিরলে সংসদের ক্ষমতাকে দুর্বল করবে: প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির

আপডেট সময় ০৫:০০:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরলে তা সংসদের ক্ষমতাকে দুর্বল করবে কিনা, এমন প্রশ্ন রেখেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বুধবার (২২ অক্টোবর) তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল বিভাগে দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে এ প্রশ্ন রাখেন প্রধান বিচারপতি। এদিন বদিউল আলম মজুমদারের আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিয়ে ১৪তম জাতীয় নির্বাচন থেকে তা কার্যকর চেয়ে আপিল বিভাগে শুনানি করেন।

এ সময় তিনি আপিল বিভাগকে বলেন, হাইকোর্ট থেকে আপিল বিভাগ পর্যন্ত মোট ১২ জন বিচারপতি এ মামলাটি শুনেছেন। কিন্তু এর মধ্যে ৮ জনই তা রাখার পক্ষে মত দেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকসহ চারজন তা বাতিল করতে বলেন। পরে আইনজীবী শরীফ ভুঁইয়া বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আপিল বিভাগ একটি গাইডলাইন করে দিতে পারে। প্রধান বিচারপতি বলেছেন— তত্ত্বাবধায়ক মামলার আপিল শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনো মামলার আপিল শুনানি হবে না। এটাই এখন সবচেয়ে বড় মামলা।

এর আগে ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের প্রথম দিনের শুনানি হয়। গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।

প্রসঙ্গত, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। এ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান। আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।