ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
টেকনাফে ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ বিএনপি নেতা আটক, দল থেকে বহিষ্কার জামায়াত নেতা ফায়জুল হকের বিএনপি থেকে পদত্যাগ নাটক! চাঁদপুরে মসজিদে খতিবের ওপর হামলা: হামলাকারীর স্বীকারোক্তি, খতিব আপাতত শঙ্কামুক্ত ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি সম্মেলনে রক্তক্ষয়ী উত্তেজনা: মহাসচিবের ভাই আহত, গাড়ি ভাঙচুর পল্লবীতে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে গুলি ও হামলা, আহত ১ চকবাজারে ব্যবসায়ী হত্যা: বিচারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ ‘চাঁদাবাজদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে জাহান্নামের চৌরাস্তায় পাঠিয়ে দেয়া হবে’ ৫ কোটি টাকা চাঁদার দাবিতে বাস ভাংচুর, যুবদল নেতা দল থেকে বহিষ্কার খালি নির্বাচন নির্বাচন করেন, খুনি চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলেন না কেন?: বিএনপিকে জামায়াত নেতা রফিকুল ইরানের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রকে ছোট করে দেখা পশ্চিমাদের বড় ভুল: ফ্রান্স

ইসরায়েলি গোয়েন্দারা ইরানি জেনারেলদের স্ত্রী-সন্তানসহ হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৯:০৫:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
  • ২৫৮ বার পড়া হয়েছে

১৩ জুনের ইসরায়েলি হামলার ঠিক পরপরই ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ এক মনস্তাত্ত্বিক অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দারা। মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৩ জুনের আক্রমণে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ার মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি গোয়েন্দারা ইরান রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) অন্তত ২০ জন জেনারেলকে ফোন করেন।

ফাঁস হওয়া এক অডিওতে ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের কণ্ঠে শোনা যায় ভয়াবহ হুমকি:

“আমরা আপনাকে হত্যা করব, আপনার পরিবার, আপনার সন্তানদের—সবাইকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেব। আমরা আপনার গলার শিরার চেয়েও কাছাকাছি।”

প্রতিবেদন মতে, ফোন কলগুলোর উদ্দেশ্য ছিল ইরানের সামরিক নেতৃত্বে বিভ্রান্তি, ভীতি ও বিভাজন সৃষ্টি করা। গোয়েন্দারা দাবি করেন, জেনারেলদেরকে বলা হয়েছিল—১২ ঘণ্টার মধ্যে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে আত্মসমর্পণের ভিডিও তৈরি করে পাঠাতে হবে। অন্যথায়, পরিবারসহ ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

তাদের মধ্যে কেউ যদি নিহতদের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পথে এগোতে চান, তাহলে তাকেই হবে ‘পরবর্তী লক্ষ্য’।

জেনারেলদের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কেউই এ হুমকির কাছে মাথা নত করেননি। পালাননি, আত্মসমর্পণ করেননি, এমনকি কোনো ভিডিও বার্তাও পাঠাননি।

এর ফলে, ইসরায়েলের এ অভিযান মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করছে তেহরানঘনিষ্ঠ সূত্র।

ওয়াশিংটন পোস্ট আরও জানায়, শুধু ফোনকল নয়—ইরানি কিছু কর্মকর্তার বাসার দরজার নিচ দিয়ে চিঠিও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারও স্ত্রীদের ফোন করেও দেওয়া হয়েছিল প্রাণনাশের হুমকি। এতে বোঝানো হয়, ইসরায়েলি গোয়েন্দারা তাদের গতিবিধি পুরোপুরি জানে এবং তারা মোসাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ছিল ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ও সেনাবাহিনী আমানের একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা, যার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের সেনা কাঠামো ভেঙে দেওয়া এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়ে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা তৈরি করা।

তেহরানের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে সরাসরি প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের হামলা কেবলমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, মানসিক ও তথ্য যুদ্ধেও ইসরায়েলের সক্রিয় অংশগ্রহণ তুলে ধরে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

টেকনাফে ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ বিএনপি নেতা আটক, দল থেকে বহিষ্কার

ইসরায়েলি গোয়েন্দারা ইরানি জেনারেলদের স্ত্রী-সন্তানসহ হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন

আপডেট সময় ০৯:০৫:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

১৩ জুনের ইসরায়েলি হামলার ঠিক পরপরই ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ এক মনস্তাত্ত্বিক অভিযান চালিয়েছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দারা। মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৩ জুনের আক্রমণে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ার মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি গোয়েন্দারা ইরান রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) অন্তত ২০ জন জেনারেলকে ফোন করেন।

ফাঁস হওয়া এক অডিওতে ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের কণ্ঠে শোনা যায় ভয়াবহ হুমকি:

“আমরা আপনাকে হত্যা করব, আপনার পরিবার, আপনার সন্তানদের—সবাইকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেব। আমরা আপনার গলার শিরার চেয়েও কাছাকাছি।”

প্রতিবেদন মতে, ফোন কলগুলোর উদ্দেশ্য ছিল ইরানের সামরিক নেতৃত্বে বিভ্রান্তি, ভীতি ও বিভাজন সৃষ্টি করা। গোয়েন্দারা দাবি করেন, জেনারেলদেরকে বলা হয়েছিল—১২ ঘণ্টার মধ্যে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে আত্মসমর্পণের ভিডিও তৈরি করে পাঠাতে হবে। অন্যথায়, পরিবারসহ ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

তাদের মধ্যে কেউ যদি নিহতদের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পথে এগোতে চান, তাহলে তাকেই হবে ‘পরবর্তী লক্ষ্য’।

জেনারেলদের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কেউই এ হুমকির কাছে মাথা নত করেননি। পালাননি, আত্মসমর্পণ করেননি, এমনকি কোনো ভিডিও বার্তাও পাঠাননি।

এর ফলে, ইসরায়েলের এ অভিযান মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করছে তেহরানঘনিষ্ঠ সূত্র।

ওয়াশিংটন পোস্ট আরও জানায়, শুধু ফোনকল নয়—ইরানি কিছু কর্মকর্তার বাসার দরজার নিচ দিয়ে চিঠিও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারও স্ত্রীদের ফোন করেও দেওয়া হয়েছিল প্রাণনাশের হুমকি। এতে বোঝানো হয়, ইসরায়েলি গোয়েন্দারা তাদের গতিবিধি পুরোপুরি জানে এবং তারা মোসাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি ছিল ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ও সেনাবাহিনী আমানের একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা, যার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের সেনা কাঠামো ভেঙে দেওয়া এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়ে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা তৈরি করা।

তেহরানের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে সরাসরি প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের হামলা কেবলমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, মানসিক ও তথ্য যুদ্ধেও ইসরায়েলের সক্রিয় অংশগ্রহণ তুলে ধরে।