ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
পল্লবীতে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে গুলি ও হামলা, আহত ১ চকবাজারে ব্যবসায়ী হত্যা: বিচারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ ‘চাঁদাবাজদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে জাহান্নামের চৌরাস্তায় পাঠিয়ে দেয়া হবে’ ৫ কোটি টাকা চাঁদার দাবিতে বাস ভাংচুর, যুবদল নেতা দল থেকে বহিষ্কার খালি নির্বাচন নির্বাচন করেন, খুনি চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলেন না কেন?: বিএনপিকে জামায়াত নেতা রফিকুল ইরানের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রকে ছোট করে দেখা পশ্চিমাদের বড় ভুল: ফ্রান্স ছাত্রদল শহীদ পরিবারের পাশে সন্তানের মতো থাকবে: রাকিব তারা ভেবেছিল, কয়েকটি আসনের লোভ দেখিয়ে আমাদের কিনে নেবে: নাহিদ ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ড: ৫ দিনের রিমান্ডে টিটন গাজী ‘তারা প্রতি মাসে দুই লাখ করে টাকা চায়, না দেওয়ায় মেরেই ফেললো’

ইরানকে দেখে শিক্ষা, আর থামবেন না কিম

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০১:৪৮:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
  • ৭৪৫ বার পড়া হয়েছে

এবার ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিল যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব। এ নিয়ে দরকষাকষি ও সম্ভাব্য চুক্তির আলোচনার মধ্যেই তেহরানে হামলা করে বসল তেলআবিব। ইরানের পাল্টা প্রতিরোধে ইসরায়েল যখন কোণঠাসা তখন যুক্তরাষ্ট্র বি-২ বোম্বার পাঠিয়ে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বাঙ্কার-বাস্টার ফেলল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব মোড়লের এমন আগ্রাসী কাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিরোধী শক্তি। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের চাপে থাকা উত্তর কোরিয়া ইরানের পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিচ্ছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, তেহরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমানের হামলা বিশ্বের উদীয়মান শক্তিকে নাড়িয়ে দেয়। পূর্ব এশিয়ার নীতিনির্ধারক এবং বিশ্লেষকরা ইতিমধ্যেই ঘটনার মূল্যায়ন শুরু করেছেন। তারা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সমাধানের মুখোমুখি হচ্ছেন। এই ঘটনা উত্তর কোরিয়ার কাছে কী সংকেত পাঠাবে, যে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রাগার ইরানের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত?

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ওয়াশিংটনের সামরিক পদক্ষেপ পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্র কর্মসূচি ত্বরান্বিত করার এবং রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা গভীর করার সংকল্পকে আরও শক্ত করতে পারে। পাশাপাশি কিম জং উনের পশ্চিমা বিশ্ব বিরোধী বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। উত্তর কোরিয়ার মনে করা স্বাভাবিক যে, কোনো দেশের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনে মার্কিন-প্ররোচনার বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রই চূড়ান্ত প্রতিরোধক।

উত্তর কোরিয়াকে তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ত্যাগ করতে রাজি করার জন্য বছরের পর বছর ধরে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু কিম সরকারের কাছে একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়। সেই সঙ্গে এমন ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা সম্ভাব্যভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে পারে। যার অর্থ কোরিয়ান উপদ্বীপে যে কোনো সম্ভাব্য সামরিক হামলার ঝুঁকি অনেক বেশি হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার কিউংনাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর কোরিয়ান গবেষণার অধ্যাপক লিম ইউল-চুল বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হামলা নিঃসন্দেহে উত্তর কোরিয়ার শাসনব্যবস্থা টিকে থাকার এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দীর্ঘস্থায়ী নীতির বৈধতাকে আরও জোরদার করবে। উত্তর কোরিয়া সাম্প্রতিক মার্কিন বিমান হামলাকে একটি পূর্ব-সামরিক হুমকি হিসেবে দেখে এবং সম্ভবত পূর্ব-সামরিক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করবে।

শুধু উত্তর কোরিয়া নয়; রাশিয়াও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বাড়াতে পারে। প্রভাবশালী রুশ রাজনৈতিক দার্শনিক এবং ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক আলেকজান্ডার ডুগিন বলেন, কেউ কেউ এখনো এই ভ্রমের মধ্যে আছেন যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোনোভাবে আমাদের পাশ কাটিয়ে যাবে। তা হবে না। আমরা এরই মধ্যে এর গভীরে রয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মিত্র ইরানের বিরুদ্ধে বোমা হামলা চালিয়েছে। কিছুই তাদের থামায়নি। যদি কিছুই তাদের ইরানে বোমা হামলা থেকে না থামায়, তবে পরে আমাদের লক্ষ্যবস্তু করা থেকেও কিছুই তাদের থামাবে না। কোনো এক সময় তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, রাশিয়া ইরানের মতো পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হওয়া উচিত নয়—অথবা হামলার জন্য অন্য কোনো অজুহাত খুঁজে পেতে পারে। কোনো ভুল করবেন না। আমরা যুদ্ধে রয়েছি।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পল্লবীতে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে গুলি ও হামলা, আহত ১

ইরানকে দেখে শিক্ষা, আর থামবেন না কিম

আপডেট সময় ০১:৪৮:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

এবার ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিল যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব। এ নিয়ে দরকষাকষি ও সম্ভাব্য চুক্তির আলোচনার মধ্যেই তেহরানে হামলা করে বসল তেলআবিব। ইরানের পাল্টা প্রতিরোধে ইসরায়েল যখন কোণঠাসা তখন যুক্তরাষ্ট্র বি-২ বোম্বার পাঠিয়ে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বাঙ্কার-বাস্টার ফেলল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্ব মোড়লের এমন আগ্রাসী কাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিরোধী শক্তি। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের চাপে থাকা উত্তর কোরিয়া ইরানের পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিচ্ছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, তেহরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমানের হামলা বিশ্বের উদীয়মান শক্তিকে নাড়িয়ে দেয়। পূর্ব এশিয়ার নীতিনির্ধারক এবং বিশ্লেষকরা ইতিমধ্যেই ঘটনার মূল্যায়ন শুরু করেছেন। তারা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সমাধানের মুখোমুখি হচ্ছেন। এই ঘটনা উত্তর কোরিয়ার কাছে কী সংকেত পাঠাবে, যে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রাগার ইরানের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত?

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ওয়াশিংটনের সামরিক পদক্ষেপ পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্র কর্মসূচি ত্বরান্বিত করার এবং রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা গভীর করার সংকল্পকে আরও শক্ত করতে পারে। পাশাপাশি কিম জং উনের পশ্চিমা বিশ্ব বিরোধী বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। উত্তর কোরিয়ার মনে করা স্বাভাবিক যে, কোনো দেশের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনে মার্কিন-প্ররোচনার বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রই চূড়ান্ত প্রতিরোধক।

উত্তর কোরিয়াকে তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ত্যাগ করতে রাজি করার জন্য বছরের পর বছর ধরে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু কিম সরকারের কাছে একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়। সেই সঙ্গে এমন ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা সম্ভাব্যভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে পারে। যার অর্থ কোরিয়ান উপদ্বীপে যে কোনো সম্ভাব্য সামরিক হামলার ঝুঁকি অনেক বেশি হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার কিউংনাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর কোরিয়ান গবেষণার অধ্যাপক লিম ইউল-চুল বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হামলা নিঃসন্দেহে উত্তর কোরিয়ার শাসনব্যবস্থা টিকে থাকার এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দীর্ঘস্থায়ী নীতির বৈধতাকে আরও জোরদার করবে। উত্তর কোরিয়া সাম্প্রতিক মার্কিন বিমান হামলাকে একটি পূর্ব-সামরিক হুমকি হিসেবে দেখে এবং সম্ভবত পূর্ব-সামরিক পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করবে।

শুধু উত্তর কোরিয়া নয়; রাশিয়াও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বাড়াতে পারে। প্রভাবশালী রুশ রাজনৈতিক দার্শনিক এবং ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক আলেকজান্ডার ডুগিন বলেন, কেউ কেউ এখনো এই ভ্রমের মধ্যে আছেন যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোনোভাবে আমাদের পাশ কাটিয়ে যাবে। তা হবে না। আমরা এরই মধ্যে এর গভীরে রয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মিত্র ইরানের বিরুদ্ধে বোমা হামলা চালিয়েছে। কিছুই তাদের থামায়নি। যদি কিছুই তাদের ইরানে বোমা হামলা থেকে না থামায়, তবে পরে আমাদের লক্ষ্যবস্তু করা থেকেও কিছুই তাদের থামাবে না। কোনো এক সময় তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, রাশিয়া ইরানের মতো পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হওয়া উচিত নয়—অথবা হামলার জন্য অন্য কোনো অজুহাত খুঁজে পেতে পারে। কোনো ভুল করবেন না। আমরা যুদ্ধে রয়েছি।