রংপুর বিনোদন উদ্যান ও চিড়িয়াখানার ভেতরের শিশুপার্কে চালানো বিনোদন ট্রেনের নিচে পড়ে আড়াই বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় মুহূর্তেই আনন্দঘন পরিবেশ পরিণত হয় শোকের আবহে।
দ্রুত উদ্ধার করে শিশুটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লালমনিরহাট থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুরতে এসে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হয় শিশুটি। এক মুহূর্তের অসতর্কতায় শেষ হয়ে যায় তার ছোট্ট জীবন।
হাসপাতাল চত্বরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশুটির বাবা বলেন, “আমার ছেলে খেলছিল। আমি মাত্র এক মুহূর্তের জন্য পিছনে ফিরেছিলাম। এরপর দেখি সে ট্রেনের নিচে পড়ে গেছে। সবকিছু আমার সামনে ঘটেছে, আমি কিছুই করতে পারিনি।” শোকসন্তপ্ত পরিবার শিশুটির নাম জানাতে চাননি এবং মরদেহ নিয়ে তাড়াহুড়া করে হাসপাতাল ত্যাগ করেন, এমনকি সংগ্রহ করেননি ডেড সার্টিফিকেটও।
দুর্ঘটনার পর দর্শনার্থীরা অভিযোগ তুলেছেন, চিড়িয়াখানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। তারা জানান, বিনোদন ট্রেন চলাচলের পথে সঠিক সিগন্যাল বা সতর্কীকরণ চিহ্ন নেই, কর্মীদের উপস্থিতিও কম থাকে—ফলে শিশুদের ঝুঁকির মধ্যেই চলাচল করতে হয়।
স্থানীয় দর্শনার্থী আব্দুল হামিদ বলেন, “চিড়িয়াখানায় ট্রেন চলে ঠিকই, কিন্তু কোথাও স্পষ্ট সতর্কতা বোর্ড নেই। পর্যাপ্ত কর্মী না থাকায় নজরদারিও নেই।”
এ বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক দুর্ঘটনা। নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। দর্শনার্থীদের সচেতনতা এবং প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানো জরুরি।”
রংপুর বিনোদন উদ্যান ও চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. ওমর আলী জানান, “এমন ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। রাইডগুলো ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করলেও বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি।”
শিশুর জীবন কেড়ে নেওয়া এই দুর্ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলেছে—বিনোদন কেন্দ্রে শিশুদের নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত?

ডেস্ক রিপোর্ট 

























