ঢাকা , বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
সেনাপ্রধানের আহ্বান: একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্মি সার্ভিস কোর সর্বদা প্রস্তুত থাকুক ক্লাসে ঢুকে ডাস্টার দিয়ে ছাত্রীকে মেরে মাথা ফাটালেন শিক্ষক বোরকা ছাড়া হাসপাতালে প্রবেশের অনুমতি নেই আফগান নারীদের ড. ইউনূস সরকার হ’টা’নোর পরিকল্পনা নিয়ে হাসিনা-পুতুলের ত’র্কাত’র্কি লকডাউন নিয়ে বিভক্ত আ.লীগ, হামলার ছক কষছে এক পক্ষ রাজশাহীতে টায়ারে আগুন দিতে গিয়ে দগ্ধ ছাত্রদল নেতা শহীদুল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ঢাকায় ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন, ‘লকডাউন’ ঘিরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি দিল্লিতে শেখ হাসিনার গোপন বৈঠক: দেশ destabilize করার পরিকল্পনা ফাঁস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ স্থাপনায় তালা ঝুলিয়ে ‘লকডাউন সফল’ আহ্বান ছাত্রলীগের 🇸🇦 ২০২৬ সালের হজচুক্তি স্বাক্ষরিত: বাংলাদেশ থেকে ৭৮ হাজার ৫০০ জন হজ পালন করবেন

ফার্মগেটে মেট্রোরেল পিলার থেকে পড়ে তরুণ উদ্যোক্তার মৃত্যু: আগের রাতের ফেসবুক পোস্টে জীবনের অনুযোগ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১০:৫৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • ৫৭৫ বার পড়া হয়েছে

 

ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ঘটলো এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মেট্রোরেলের একটি পিলার থেকে ভারী ধাতব যন্ত্রাংশ—বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে প্রাণ হারান ৩৫ বছর বয়সী তরুণ উদ্যোক্তা আবুল কালাম। মুহূর্তেই থেমে যায় তার স্বপ্নময় জীবন, আর পরিবার ও প্রিয়জনদের হৃদয়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামের সন্তান আবুল কালাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করতেন। সংসার নিয়ে ছিলেন নারায়ণগঞ্জে—যেখানে অপেক্ষায় ছিল তার পাঁচ বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ও তিন বছরের মেয়ে সুরাইয়া আক্তার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই মানুষটিকে হারিয়ে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে গোটা পরিবার।

দুর্ঘটনার আগের রাতেই তার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়ে পড়ে—
“ইচ্ছে তো অনেক। আপাতত যদি জীবন থেকে পালিয়ে যেতে পারতাম।”
পরের দিনই সেই জীবন তাকে পালানোর সুযোগ না দিয়ে থামিয়ে দিল চিরতরে।

তার বন্ধু তারেক আজিজ পোস্টটি শেয়ার করে লিখেছেন, “কিছু মৃত্যু মেনে নিতে খুবই কষ্ট হয়।”

স্থানীয়রা বলছেন, এ দুর্ঘটনা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে গুরুতর অবহেলার ইঙ্গিত দেয়। নাগরিক নিরাপত্তার ঘাটতি আর মনোযোগের অভাব এমন ঘটনাকে বাড়িয়ে তুলছে প্রতিনিয়ত।

সহকর্মীরা জানাচ্ছেন, আবুল কালাম ছিলেন প্রাণবন্ত, পরিশ্রমী, স্বপ্নবাজ একজন মানুষ। তার আকস্মিক মৃত্যুকে কেউই মেনে নিতে পারছেন না।

মা-বাবা হারানো এই তরুণ তার স্ত্রী ও দুই শিশুকে রেখে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিলেন অবুঝ এক অনিশ্চিত মুহূর্তে। তাদের পথচলা এখন শুরু হলো বাবাহীন এক কঠোর বাস্তবতার সঙ্গে।

ঘটনাটি আবারও মনে করিয়ে দেয়—জীবন কতটা অনিশ্চিত, আর নিরাপত্তা কতটা অপরিহার্য। একটি ফেসবুক পোস্টের নীরব আর্তি আর একটি যান্ত্রিক অবহেলা মিলে শেষ হয়ে গেল একটি স্বপ্নময় ভবিষ্যৎ।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সেনাপ্রধানের আহ্বান: একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আর্মি সার্ভিস কোর সর্বদা প্রস্তুত থাকুক

ফার্মগেটে মেট্রোরেল পিলার থেকে পড়ে তরুণ উদ্যোক্তার মৃত্যু: আগের রাতের ফেসবুক পোস্টে জীবনের অনুযোগ

আপডেট সময় ১০:৫৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

 

ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ঘটলো এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মেট্রোরেলের একটি পিলার থেকে ভারী ধাতব যন্ত্রাংশ—বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে প্রাণ হারান ৩৫ বছর বয়সী তরুণ উদ্যোক্তা আবুল কালাম। মুহূর্তেই থেমে যায় তার স্বপ্নময় জীবন, আর পরিবার ও প্রিয়জনদের হৃদয়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামের সন্তান আবুল কালাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করতেন। সংসার নিয়ে ছিলেন নারায়ণগঞ্জে—যেখানে অপেক্ষায় ছিল তার পাঁচ বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ও তিন বছরের মেয়ে সুরাইয়া আক্তার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই মানুষটিকে হারিয়ে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে গোটা পরিবার।

দুর্ঘটনার আগের রাতেই তার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়ে পড়ে—
“ইচ্ছে তো অনেক। আপাতত যদি জীবন থেকে পালিয়ে যেতে পারতাম।”
পরের দিনই সেই জীবন তাকে পালানোর সুযোগ না দিয়ে থামিয়ে দিল চিরতরে।

তার বন্ধু তারেক আজিজ পোস্টটি শেয়ার করে লিখেছেন, “কিছু মৃত্যু মেনে নিতে খুবই কষ্ট হয়।”

স্থানীয়রা বলছেন, এ দুর্ঘটনা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে গুরুতর অবহেলার ইঙ্গিত দেয়। নাগরিক নিরাপত্তার ঘাটতি আর মনোযোগের অভাব এমন ঘটনাকে বাড়িয়ে তুলছে প্রতিনিয়ত।

সহকর্মীরা জানাচ্ছেন, আবুল কালাম ছিলেন প্রাণবন্ত, পরিশ্রমী, স্বপ্নবাজ একজন মানুষ। তার আকস্মিক মৃত্যুকে কেউই মেনে নিতে পারছেন না।

মা-বাবা হারানো এই তরুণ তার স্ত্রী ও দুই শিশুকে রেখে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিলেন অবুঝ এক অনিশ্চিত মুহূর্তে। তাদের পথচলা এখন শুরু হলো বাবাহীন এক কঠোর বাস্তবতার সঙ্গে।

ঘটনাটি আবারও মনে করিয়ে দেয়—জীবন কতটা অনিশ্চিত, আর নিরাপত্তা কতটা অপরিহার্য। একটি ফেসবুক পোস্টের নীরব আর্তি আর একটি যান্ত্রিক অবহেলা মিলে শেষ হয়ে গেল একটি স্বপ্নময় ভবিষ্যৎ।