ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ সালাউদ্দিনকে ‘গডফাদার’ ডাকায় উত্তাল কক্সবাজার, এনসিপির সমাবেশে ভাঙচুর চাঁদা নেব না, নিতেও দেব না: জামায়াত আমির বক্তব্যের মাঝে মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির মজলুমরা আজ জালিম হয়ে উঠছে: নুর জামায়াতের সমাবেশে দাওয়াত পায়নি বিএনপি বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের জায়গা হবে না: জামায়াতের সমাবেশে সারজিস উগান্ডায় বোম পড়লেও কি বিএনপির দোষ?: পার্থ বর্তমানে আওয়ামী লীগ বলে কিছু নেই, এটি একটি মাফিয়া চক্রে পরিণত: সোহেল তাজ ভারতের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আমার ছেলে শহীদ হয়: আবরার ফাহাদের বাবা

২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও ৭১ নিহত, ত্রাণ নিতে গিয়ে চার সপ্তাহে প্রাণ গেল ৫৪৯ ফিলিস্তিনির

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১১:২৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • ১২৯ বার পড়া হয়েছে

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা আক্রমণে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় রক্তপাত থামছে না। হাসপাতাল সূত্র উদ্ধৃত করে আল জাজিরা জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নতুন এই প্রাণহানি যোগ হয়ে ২০২৩-এর অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ২৫৯ জনে, আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে এক লাখ ৩২ হাজার ৪৫৮-এ।

বিশাল এ মৃত্যুর মিছিলে নতুন করে দৃষ্টি কাড়ছে আরেকটি ভয়াবহ পরিসংখ্যান। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গত চার সপ্তাহে মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি গুলিতে ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৬৬ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনা ঘটেছে মার্কিন ও ইসরায়েলি সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্র ও তাদের আশপাশে, যেখানে ক্ষুধার্ত মানুষ সাহায্যের আশায় জড়ো হয়।

খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট যে কতটা চরমে, তা সম্প্রতি প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) এক প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ এখন তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, আর উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে প্রতিদিনই। ইসরায়েলি হামলায় সড়কবন্দর বিধ্বস্ত, ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে ঘনঘন তল্লাশিতে আটকে দেওয়া হচ্ছে; কখনও সরাসরি হামলার মুখেও পড়ছে তারা, বলে অভিযোগ ‘ডাক্তারস উইদাউট বর্ডারস’সহ (এমএসএফ) একাধিক মানবাধিকার সংস্থার।

ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ পেতে গিয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগের সূত্রপাত করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এসব হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গাজার জন্য “নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ” মানবিক করিডর চালুর আহ্বান জানিয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, ত্রাণে বাধা দেওয়া ও বেসামরিক জনতার ওপর নিপীড়ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।

অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সংকট প্রতিদিনই আরও তীব্র আকার নিচ্ছে। খাদ্য, ওষুধ, নিরাপদ আশ্রয়—সবকিছুর ঘাটতি যখন মর্মান্তিক পর্যায়ে পৌঁছেছে, তখন ত্রাণ সংগ্রহের ওই হতাহত-পরিসংখ্যান যুদ্ধের ভয়াবহতার আরেকটি মূর্ত প্রমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপ আর নিন্দার মধ্যেও ইসরায়েলি সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকায়, গাজার বাসিন্দাদের সামনে এখনো আশু কোন স্বস্তির আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে না।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ

২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও ৭১ নিহত, ত্রাণ নিতে গিয়ে চার সপ্তাহে প্রাণ গেল ৫৪৯ ফিলিস্তিনির

আপডেট সময় ১১:২৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা আক্রমণে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় রক্তপাত থামছে না। হাসপাতাল সূত্র উদ্ধৃত করে আল জাজিরা জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নতুন এই প্রাণহানি যোগ হয়ে ২০২৩-এর অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ২৫৯ জনে, আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে এক লাখ ৩২ হাজার ৪৫৮-এ।

বিশাল এ মৃত্যুর মিছিলে নতুন করে দৃষ্টি কাড়ছে আরেকটি ভয়াবহ পরিসংখ্যান। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গত চার সপ্তাহে মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি গুলিতে ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৬৬ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনা ঘটেছে মার্কিন ও ইসরায়েলি সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্র ও তাদের আশপাশে, যেখানে ক্ষুধার্ত মানুষ সাহায্যের আশায় জড়ো হয়।

খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট যে কতটা চরমে, তা সম্প্রতি প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) এক প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ এখন তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, আর উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে প্রতিদিনই। ইসরায়েলি হামলায় সড়কবন্দর বিধ্বস্ত, ত্রাণবাহী ট্রাকগুলোকে ঘনঘন তল্লাশিতে আটকে দেওয়া হচ্ছে; কখনও সরাসরি হামলার মুখেও পড়ছে তারা, বলে অভিযোগ ‘ডাক্তারস উইদাউট বর্ডারস’সহ (এমএসএফ) একাধিক মানবাধিকার সংস্থার।

ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ পেতে গিয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগের সূত্রপাত করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এসব হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গাজার জন্য “নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ” মানবিক করিডর চালুর আহ্বান জানিয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, ত্রাণে বাধা দেওয়া ও বেসামরিক জনতার ওপর নিপীড়ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।

অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সংকট প্রতিদিনই আরও তীব্র আকার নিচ্ছে। খাদ্য, ওষুধ, নিরাপদ আশ্রয়—সবকিছুর ঘাটতি যখন মর্মান্তিক পর্যায়ে পৌঁছেছে, তখন ত্রাণ সংগ্রহের ওই হতাহত-পরিসংখ্যান যুদ্ধের ভয়াবহতার আরেকটি মূর্ত প্রমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপ আর নিন্দার মধ্যেও ইসরায়েলি সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকায়, গাজার বাসিন্দাদের সামনে এখনো আশু কোন স্বস্তির আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে না।