ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ সালাউদ্দিনকে ‘গডফাদার’ ডাকায় উত্তাল কক্সবাজার, এনসিপির সমাবেশে ভাঙচুর চাঁদা নেব না, নিতেও দেব না: জামায়াত আমির বক্তব্যের মাঝে মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির মজলুমরা আজ জালিম হয়ে উঠছে: নুর জামায়াতের সমাবেশে দাওয়াত পায়নি বিএনপি বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের জায়গা হবে না: জামায়াতের সমাবেশে সারজিস উগান্ডায় বোম পড়লেও কি বিএনপির দোষ?: পার্থ বর্তমানে আওয়ামী লীগ বলে কিছু নেই, এটি একটি মাফিয়া চক্রে পরিণত: সোহেল তাজ ভারতের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আমার ছেলে শহীদ হয়: আবরার ফাহাদের বাবা

নিজের কিডনি দিয়ে জীবন বাঁচালেও অকৃতজ্ঞ স্বামীর পরকীয়া–জুয়ায় সর্বস্বান্ত টুনি

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৫:৫৬:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
  • ৩৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজের কিডনি দিয়ে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন প্রিয় মানুষটিকে—স্বামীকে। ভালোবাসার ত্যাগে যিনি নিজের শরীরের অংশ দান করেছিলেন, সেই স্ত্রী উম্মে সাহেদীনা টুনিকেই আজ ঘরছাড়া করেছে সেই স্বামী তারেক। শুধু ঘরছাড়া নয়, মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে এখন প্রেমিকার সঙ্গে বসবাস করছেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে সাভারের কলমা এলাকায়। নির্যাতিত স্ত্রী টুনি এখন নারী নির্যাতন মামলা করে বিচার প্রার্থনা করছেন। অভিযুক্ত মোহাম্মদ তারেক বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

২০০৬ সালে কলেজপড়ুয়া টুনির সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবক তারেকের। বছর না যেতেই জন্ম হয় একমাত্র সন্তান আজমাইন দিব্যের। সুখের সংসারেই চলছিল সব। কিন্তু ২০০৮ সালে আচমকাই বিপর্যয় নামে—তারেক আক্রান্ত হন কিডনি রোগে। জানা যায়, তার দুটি কিডনিই প্রায় অচল।

চিকিৎসকরা জানান, নিয়মিত ডায়ালাইসিস ছাড়া বাঁচার উপায় নেই। আর কিডনি প্রতিস্থাপন করতেই হবে। স্বামীর মুখে মৃত্যুর ছায়া দেখে ভেঙে পড়েন টুনি। কিন্তু হাল ছাড়েন না। এক সপ্তাহের মধ্যে ভারতের সিএমসি হাসপাতালে নিয়ে যান তারেককে।

ভারতে চিকিৎসা চলাকালে একসময় সিদ্ধান্ত নিতে হয় কিডনি প্রতিস্থাপনের। কোনো দ্বিতীয় চিন্তা ছাড়াই টুনি নিজের একটি কিডনি দান করেন স্বামীকে।

ঢাকায় ফিরে সংসার চালাতে নিজের হাতে হোম বিউটি পার্লার ও বুটিক ব্যবসা শুরু করেন টুনি। মাসে উপার্জন করতেন ৪০-৫০ হাজার টাকা। তারেকের ওষুধ, নিয়মিত ডায়ালাইসিস ও ভারত যাওয়া-আসার খরচ চালাতে বিক্রি করে দেন বিয়ের গয়না, জমানো সঞ্চয়। সবই শুধুমাত্র স্বামীর বেঁচে থাকার জন্য।

কিন্তু সব প্রত্যাশাকে পেছনে ফেলে, কিডনি প্রতিস্থাপনের পর সুস্থ হয়ে বদলে যেতে থাকেন তারেক। জড়িয়ে পড়েন পরকীয়া সম্পর্ক ও অনলাইন জুয়ায়। স্ত্রী টুনির সঙ্গে শুরু করেন দুর্ব্যবহার, গায়ে হাত তোলা। একসময় প্রেমিকার সঙ্গে একত্রে থাকতে স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

স্থানীয় সূত্র ও পারিবারিক অভিযোগ অনুযায়ী, বর্তমানে প্রেমিকার সঙ্গে এক বাসায় থাকছেন তারেক।

টুনি বাধ্য হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেন। তারেক কিছুদিন জেলে থাকলেও এখন জামিনে। তবে টুনি ও তার সন্তানের জীবনে নেমে এসেছে নৈরাশ্যের অন্ধকার।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ

নিজের কিডনি দিয়ে জীবন বাঁচালেও অকৃতজ্ঞ স্বামীর পরকীয়া–জুয়ায় সর্বস্বান্ত টুনি

আপডেট সময় ০৫:৫৬:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

নিজের কিডনি দিয়ে প্রাণে বাঁচিয়েছিলেন প্রিয় মানুষটিকে—স্বামীকে। ভালোবাসার ত্যাগে যিনি নিজের শরীরের অংশ দান করেছিলেন, সেই স্ত্রী উম্মে সাহেদীনা টুনিকেই আজ ঘরছাড়া করেছে সেই স্বামী তারেক। শুধু ঘরছাড়া নয়, মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে এখন প্রেমিকার সঙ্গে বসবাস করছেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে সাভারের কলমা এলাকায়। নির্যাতিত স্ত্রী টুনি এখন নারী নির্যাতন মামলা করে বিচার প্রার্থনা করছেন। অভিযুক্ত মোহাম্মদ তারেক বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

২০০৬ সালে কলেজপড়ুয়া টুনির সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবক তারেকের। বছর না যেতেই জন্ম হয় একমাত্র সন্তান আজমাইন দিব্যের। সুখের সংসারেই চলছিল সব। কিন্তু ২০০৮ সালে আচমকাই বিপর্যয় নামে—তারেক আক্রান্ত হন কিডনি রোগে। জানা যায়, তার দুটি কিডনিই প্রায় অচল।

চিকিৎসকরা জানান, নিয়মিত ডায়ালাইসিস ছাড়া বাঁচার উপায় নেই। আর কিডনি প্রতিস্থাপন করতেই হবে। স্বামীর মুখে মৃত্যুর ছায়া দেখে ভেঙে পড়েন টুনি। কিন্তু হাল ছাড়েন না। এক সপ্তাহের মধ্যে ভারতের সিএমসি হাসপাতালে নিয়ে যান তারেককে।

ভারতে চিকিৎসা চলাকালে একসময় সিদ্ধান্ত নিতে হয় কিডনি প্রতিস্থাপনের। কোনো দ্বিতীয় চিন্তা ছাড়াই টুনি নিজের একটি কিডনি দান করেন স্বামীকে।

ঢাকায় ফিরে সংসার চালাতে নিজের হাতে হোম বিউটি পার্লার ও বুটিক ব্যবসা শুরু করেন টুনি। মাসে উপার্জন করতেন ৪০-৫০ হাজার টাকা। তারেকের ওষুধ, নিয়মিত ডায়ালাইসিস ও ভারত যাওয়া-আসার খরচ চালাতে বিক্রি করে দেন বিয়ের গয়না, জমানো সঞ্চয়। সবই শুধুমাত্র স্বামীর বেঁচে থাকার জন্য।

কিন্তু সব প্রত্যাশাকে পেছনে ফেলে, কিডনি প্রতিস্থাপনের পর সুস্থ হয়ে বদলে যেতে থাকেন তারেক। জড়িয়ে পড়েন পরকীয়া সম্পর্ক ও অনলাইন জুয়ায়। স্ত্রী টুনির সঙ্গে শুরু করেন দুর্ব্যবহার, গায়ে হাত তোলা। একসময় প্রেমিকার সঙ্গে একত্রে থাকতে স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

স্থানীয় সূত্র ও পারিবারিক অভিযোগ অনুযায়ী, বর্তমানে প্রেমিকার সঙ্গে এক বাসায় থাকছেন তারেক।

টুনি বাধ্য হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেন। তারেক কিছুদিন জেলে থাকলেও এখন জামিনে। তবে টুনি ও তার সন্তানের জীবনে নেমে এসেছে নৈরাশ্যের অন্ধকার।