ইসরায়েলের টানা হামলায় গাজার প্রায় সব মসজিদই এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত। উপত্যকার ঐতিহাসিক স্থাপত্য, মিনার ও নামাজের স্থানগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। তবুও ধ্বংসস্তূপের মাঝেই আজান দিচ্ছেন মোয়াজ্জিনরা, নামাজ পড়ছেন ফিলিস্তিনিরা।
দ্য ফিলিস্তিন ইনফরমেশন সেন্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই বছরের যুদ্ধ গাজাকে প্রায় মিনারবিহীন করে দিয়েছে। যেসব মসজিদ একসময় নামাজের আহ্বানে মুখর ছিল, সেগুলো এখন ধূলা আর পাথরের স্তূপ। শতাব্দীপ্রাচীন স্থাপত্যের কোনো চিহ্ন অবশিষ্ট নেই—যেন ইতিহাসই বিলীন হয়ে গেছে বোমার নিচে।
শুজাইয়্যা এলাকার ৬২ বছর বয়সী আবু খালেদ আল-নাজ্জার ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমার বাবার কণ্ঠস্বর চেনার আগেই আমি মুয়াজ্জিনের কণ্ঠ চিনতাম। পঞ্চাশ বছর ধরে এখানে নামাজ পড়েছি, আজ সেই মসজিদের গালিচাটাও ধ্বংসস্তূপের নিচে।”
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানায়, ইসরায়েলি আগ্রাসনে উপত্যকার ১,২৪৪টি মসজিদের মধ্যে ৮৩৫টি পুরোপুরি ধ্বংস এবং ১৮০টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে মামলুক ও অটোমান যুগের শতাব্দীপ্রাচীন মসজিদও রয়েছে।
পুরনো শহরের গ্রেট ওমারি মসজিদের ধ্বংসাবশেষে ২৭ বছর বয়সী মাহমুদ কান্দিল খুঁজছেন কিবলা দেয়ালের পাথর। তিনি বলেন, “এই মসজিদ ছিল গাজার প্রাণ। এখন শুধু ধুলা। মনে হচ্ছে, তারা শুধু ভবন নয়, আমাদের স্মৃতিও মুছে ফেলতে চায়।”
আল-দারাজপাড়ার আল-সাইয়্যিদ হাশিম মসজিদের ধ্বংসাবশেষের সামনে বসে ৭৪ বছর বয়সী উম্মে ওয়ায়েল বলেন, “আমি অসুস্থ থাকলেও প্রতি বৃহস্পতিবার এখানে সূরা আল-কাহফ পড়তাম। এখন যাওয়ার জায়গা নেই। তবু ঘরে বসেই কুরআন পড়ব—আল্লাহ আমাদের কথা শুনবেন, যেখানেই থাকি।”

ডেস্ক রিপোর্ট 
























