ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ সালাউদ্দিনকে ‘গডফাদার’ ডাকায় উত্তাল কক্সবাজার, এনসিপির সমাবেশে ভাঙচুর চাঁদা নেব না, নিতেও দেব না: জামায়াত আমির বক্তব্যের মাঝে মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির মজলুমরা আজ জালিম হয়ে উঠছে: নুর জামায়াতের সমাবেশে দাওয়াত পায়নি বিএনপি বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের জায়গা হবে না: জামায়াতের সমাবেশে সারজিস উগান্ডায় বোম পড়লেও কি বিএনপির দোষ?: পার্থ বর্তমানে আওয়ামী লীগ বলে কিছু নেই, এটি একটি মাফিয়া চক্রে পরিণত: সোহেল তাজ ভারতের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আমার ছেলে শহীদ হয়: আবরার ফাহাদের বাবা

ইনকিলাব স্কয়ারে বিজয়োল্লাস, হৃদরোগে হাসপাতালে রেজা পাহলভি

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৯:০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
  • ১১৯৩ বার পড়া হয়েছে

বারো দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা—আর তাতেই তেহরানের ইনকিলাব স্কয়ার যেন পরিণত হলো বিজয়ের এক উন্মুক্ত জনসমুদ্রে। হাজারো মানুষ পতাকা হাতে, শহীদদের ছবি বুকে নিয়ে নেমে আসে রাস্তায়। উল্লাস আর শোকের এক অনন্য সম্মিলন দেখা গেল ঐতিহাসিক এই স্কয়ারে। নারী-পুরুষ, তরুণ-প্রবীণ, এমনকি শিশুদের অংশগ্রহণে এই উৎসব যেন ইরানি জাতির একতাবদ্ধ বিজয়চেতনার বহিঃপ্রকাশ।

এই সুখবরের বিপরীতে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ইরানবিরোধী আগ্রাসনের পেছনে থাকা আমেরিকা প্রবাসী রেজা পাহলভি, যিনি নিজেকে ইরানের “ভবিষ্যৎ” ভাবতেন, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার মেয়ে জানায়, যুদ্ধবিরতির খবর পাওয়ার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ যেন ইতিহাসের এক পরিহাস—যেখানে ইরানের বিজয়ে শোকাহত হয়ে ভেঙে পড়ছেন সেই পাহলভি পরিবার, যারা অতীতে দেশটিকে পশ্চিমা শক্তির হাতে তুলে দিয়েছিল।

ইরানিরা জানিয়ে দিয়েছে—পাহলভি রাজতন্ত্রের দিন শেষ। ইরানি মাটি ও শহীদদের রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতা আর কোনোদিন সাম্রাজ্যবাদের কাছে মাথানত করবে না। ইনকিলাব স্কয়ারে উচ্চারিত হয়েছে প্রাণবন্ত স্লোগান—“ইসরাইল নিপাত যাক”, “যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হোক”। এ শুধু প্রতিক্রিয়া নয়, দীর্ঘদিনের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে এক ঘনীভূত প্রতিরোধের স্ফূরণ।

উৎসবমুখর ইনকিলাব স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষ ইরানের পতাকা ও ইসলামি বিপ্লবের প্রতীক হাতে রাস্তায় নেমেছে। শিশুদের পর্যন্ত এ আয়োজন থেকে দূরে রাখা হয়নি। বাবার কাঁধে কিংবা মায়ের কোলে শিশুরাও একাত্ম হয়েছে এ জাতীয় চেতনায়। এসব দৃশ্য শুধু তেহরান নয়, গোটা ইরানকে একাকার করেছে বিজয়ের আনন্দে।

শুধু রাজধানী নয়, ইরানের অন্যান্য শহরেও চলছে বিজয় মিছিল। সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, এই বাহিনী শুধু ইসরাইলের অপরাধের প্রতিশোধই নেয়নি, বরং ইরানের আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতাকেও রক্ষা করেছে।

ইরানের এ বিজয় উদযাপন সীমান্ত ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। লেবাননের দাহিয়েতে আয়াতুল্লাহ খামেনির বিশাল ব্যানার টানানো হয়েছে। গাজা, ইয়েমেন, এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসরত ইরানপ্রেমীরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজয়ের বার্তা ছড়িয়েছেন। কেউ আনন্দাশ্রু ঝরিয়েছেন, কেউবা জয়মিছিলে অংশ নিয়েছেন।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ

ইনকিলাব স্কয়ারে বিজয়োল্লাস, হৃদরোগে হাসপাতালে রেজা পাহলভি

আপডেট সময় ০৯:০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

বারো দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা—আর তাতেই তেহরানের ইনকিলাব স্কয়ার যেন পরিণত হলো বিজয়ের এক উন্মুক্ত জনসমুদ্রে। হাজারো মানুষ পতাকা হাতে, শহীদদের ছবি বুকে নিয়ে নেমে আসে রাস্তায়। উল্লাস আর শোকের এক অনন্য সম্মিলন দেখা গেল ঐতিহাসিক এই স্কয়ারে। নারী-পুরুষ, তরুণ-প্রবীণ, এমনকি শিশুদের অংশগ্রহণে এই উৎসব যেন ইরানি জাতির একতাবদ্ধ বিজয়চেতনার বহিঃপ্রকাশ।

এই সুখবরের বিপরীতে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ইরানবিরোধী আগ্রাসনের পেছনে থাকা আমেরিকা প্রবাসী রেজা পাহলভি, যিনি নিজেকে ইরানের “ভবিষ্যৎ” ভাবতেন, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার মেয়ে জানায়, যুদ্ধবিরতির খবর পাওয়ার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ যেন ইতিহাসের এক পরিহাস—যেখানে ইরানের বিজয়ে শোকাহত হয়ে ভেঙে পড়ছেন সেই পাহলভি পরিবার, যারা অতীতে দেশটিকে পশ্চিমা শক্তির হাতে তুলে দিয়েছিল।

ইরানিরা জানিয়ে দিয়েছে—পাহলভি রাজতন্ত্রের দিন শেষ। ইরানি মাটি ও শহীদদের রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতা আর কোনোদিন সাম্রাজ্যবাদের কাছে মাথানত করবে না। ইনকিলাব স্কয়ারে উচ্চারিত হয়েছে প্রাণবন্ত স্লোগান—“ইসরাইল নিপাত যাক”, “যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হোক”। এ শুধু প্রতিক্রিয়া নয়, দীর্ঘদিনের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে এক ঘনীভূত প্রতিরোধের স্ফূরণ।

উৎসবমুখর ইনকিলাব স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষ ইরানের পতাকা ও ইসলামি বিপ্লবের প্রতীক হাতে রাস্তায় নেমেছে। শিশুদের পর্যন্ত এ আয়োজন থেকে দূরে রাখা হয়নি। বাবার কাঁধে কিংবা মায়ের কোলে শিশুরাও একাত্ম হয়েছে এ জাতীয় চেতনায়। এসব দৃশ্য শুধু তেহরান নয়, গোটা ইরানকে একাকার করেছে বিজয়ের আনন্দে।

শুধু রাজধানী নয়, ইরানের অন্যান্য শহরেও চলছে বিজয় মিছিল। সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, এই বাহিনী শুধু ইসরাইলের অপরাধের প্রতিশোধই নেয়নি, বরং ইরানের আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতাকেও রক্ষা করেছে।

ইরানের এ বিজয় উদযাপন সীমান্ত ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। লেবাননের দাহিয়েতে আয়াতুল্লাহ খামেনির বিশাল ব্যানার টানানো হয়েছে। গাজা, ইয়েমেন, এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসরত ইরানপ্রেমীরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজয়ের বার্তা ছড়িয়েছেন। কেউ আনন্দাশ্রু ঝরিয়েছেন, কেউবা জয়মিছিলে অংশ নিয়েছেন।