ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা। দীর্ঘদিনের অবরোধে বিপর্যস্ত এখানকার জীবনযাত্রা। ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন হামলা ও গুলির ভয় এড়িয়ে টিকে থাকাই যেখানে বড় চ্যালেঞ্জ, সেখানে পুষ্টিকর খাবার পাওয়া যেন স্বপ্নের মতোই বিলাসিতা।
যুদ্ধ চলাকালে গাজায় কোনো মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেয়নি ইসরায়েল। এমনকি সাগরে ফিলিস্তিনি জেলেদের মাছ ধরাও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে গত ১০ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী। এরপর ধ্বংসস্তূপের বুকে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফেরে; খুলতে শুরু করে হাটবাজার, ফিরে আসে স্বাভাবিকতার ছোঁয়া।
দীর্ঘ এক বছর পর সন্তানদের জন্য মুরগির মাংস কিনে আনেন এক ফিলিস্তিনি বাবা। তা দেখে আনন্দে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এক শিশু। ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত একটি ভবনের ভেতরে বসা তিন শিশু হঠাৎ বাবার হাতে মুরগির মাংস দেখে আনন্দে চিৎকার করে ওঠে, “আল্লাহু আকবর! এটা কি সত্যিই মুরগি? আমরা আবার মুরগির মাংস খেতে যাচ্ছি!”
ঘটনার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আল জাজিরা সোমবার (২৭ অক্টোবর) ভিডিওটি প্রকাশ করে জানায়, এই দৃশ্য গাজার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ ও বেঁচে থাকার সংগ্রামের এক আবেগঘন প্রতিচ্ছবি।
অন্য এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি শিশুর হাতে আপেল দিয়ে তার নাম জানতে চাইলে সে বলে “তরমুজ”—যুদ্ধের ভয়াবহতায় ফলের নামও ভুলে গেছে শিশুরা।
দীর্ঘ দুই বছরের যুদ্ধে ভয়াবহ খাদ্যসংকটে ভুগেছে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। অপুষ্টি ও অনাহারে শত শত শিশু মৃত্যুবরণ করেছে। কেউ কেউ ঘাস-লতা খেয়ে বেঁচে থেকেছে। ইসরায়েলি বর্বরতায় স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির, এমনকি হাটবাজারও মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।
এই প্রেক্ষাপটে এক টুকরো মুরগির মাংস গাজার শিশুদের জন্য শুধু খাবার নয়—এ যেন জীবনের স্বাদ ও আশার প্রতীক।

ডেস্ক রিপোর্ট 

























