ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে সম্প্রতি পরিচালিত একটি জনমত জরিপে। ইসরায়েলভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল ১২-এর উদ্যোগে পরিচালিত এ জরিপে দেখা গেছে, ৫৭ শতাংশ ইসরায়েলি নাগরিক চান নেতানিয়াহুকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে আগাম নির্বাচন দেওয়া হোক।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বড় একটি অংশ মনে করছেন, গাজায় আটকে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের উদ্ধার এবং গাজা শাসনকারী হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নেতানিয়াহু যে সামরিক অভিযান শুরু করেছিলেন, তা প্রায় দেড় বছরেও প্রত্যাশিত ফল আনতে পারেনি। হামাসকে এখনো ধ্বংস করা যায়নি এবং সব জিম্মিও ফেরত আসেনি।
ইসরায়েলের সংসদ নেসেট-এ মোট আসন ১২০টি। সরকার গঠন করতে হলে কোনো দল বা জোটকে অন্তত ৬১টি আসন পেতে হয়। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, এখনই যদি ইসরায়েলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নেসেটে সবচেয়ে বেশি আসন পেতে পারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেতের নেতৃত্বাধীন নিউ রাইট পার্টি— তারা পেতে পারে ২৪টি আসন।
এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি, যারা পেতে পারে ২২টি আসন। তৃতীয় অবস্থানে থাকবে ইয়াইর গোলানের নেতৃত্বাধীন ডেমোক্রেটিক পার্টি, যাদের প্রত্যাশিত আসন সংখ্যা ১২।
অন্যান্য দলের মধ্যে জরিপে যে ফলাফল উঠে এসেছে তা হলো:
- শ্যাস পার্টি (আরইয়েহ দেরির নেতৃত্বে) – ১০ আসন
- ইসরায়েল বেইতেইনু পার্টি (অ্যাভিগডর লিভারমান) – ১০ আসন
- ইয়েশ আতিদ পার্টি (ইয়াইর লাপিদ) – ৯ আসন
- ইউনাইটেড তোরাহ জুডাইসজম (ইৎজহাক গোল্ডনপের নেতৃত্বে) – ৮ আসন
- ওৎজা ইহুদিত পার্টি (ইতামার বেন গিভর) – ৮ আসন
- ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টি (বেনি গান্তজ) – ৭ আসন
- হাদাশ-তা’ল ও ইউনাইটেড আরব পার্টি – ৫টি করে আসন
এই ফলাফল থেকে স্পষ্ট, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়েছে বহু নাগরিক। তবে একই সঙ্গে এটাও বোঝা যাচ্ছে, বর্তমানে ইসরায়েলের রাজনীতিতে এমন কোনো দল নেই যারা এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করতে পারে।
এদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজায় দীর্ঘস্থায়ী সামরিক অভিযান এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বেড়েই চলেছে। যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার দুই গুরুত্বপূর্ণ শরিক ইতোমধ্যে জোট ছেড়ে বিরোধী দলে যোগ দিয়েছেন, যা ক্ষমতাসীন সরকারের ভিতকে আরও দুর্বল করে তুলেছে।