ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ সালাউদ্দিনকে ‘গডফাদার’ ডাকায় উত্তাল কক্সবাজার, এনসিপির সমাবেশে ভাঙচুর চাঁদা নেব না, নিতেও দেব না: জামায়াত আমির বক্তব্যের মাঝে মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির মজলুমরা আজ জালিম হয়ে উঠছে: নুর জামায়াতের সমাবেশে দাওয়াত পায়নি বিএনপি বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের জায়গা হবে না: জামায়াতের সমাবেশে সারজিস উগান্ডায় বোম পড়লেও কি বিএনপির দোষ?: পার্থ বর্তমানে আওয়ামী লীগ বলে কিছু নেই, এটি একটি মাফিয়া চক্রে পরিণত: সোহেল তাজ ভারতের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আমার ছেলে শহীদ হয়: আবরার ফাহাদের বাবা

আকাশেই নির্ধারিত হবে যুদ্ধের ভাগ্য: ইরানের সেনা-মিসাইল বনাম ইসরায়েলের প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা চাদর

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১১:১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
  • ৫০১ বার পড়া হয়েছে

দশকের পর দশক ধরে চলা উত্তেজনার পর অবশেষে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী—ইরান ও ইসরায়েল। বাহ্যিকভাবে ইরান এগিয়ে থাকলেও বিশ্লেষকদের মতে, আধুনিক প্রযুক্তির দিক থেকে এখনো ইসরায়েল অনেক এগিয়ে। আর এই যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু হতে যাচ্ছে আকাশ—যেখানে ইসরায়েলের আধিপত্য অনেকটাই নিশ্চিত।

সামরিক শক্তির হিসেবে ইরানের রয়েছে প্রায় ৯ লাখ ৬০ হাজার সেনা ও রিজার্ভ সদস্য, যেখানে ইসরায়েলের মোট সেনা শক্তি ৬ লাখ ৩৪ হাজার। জনসংখ্যায়ও ইরান অনেক বড়—৮৬ মিলিয়নের বিপরীতে ইসরায়েলের ১০ মিলিয়ন। তবে আধুনিক যুদ্ধের ময়দানে এসব সংখ্যার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় প্রযুক্তি, গোয়েন্দা সক্ষমতা ও আকাশ প্রতিরক্ষা।

ইসরায়েলের কাছে রয়েছে মার্কিন সহায়তায় প্রাপ্ত F-15, F-16 ও আধুনিকতম F-35 স্টেলথ যুদ্ধবিমান, যা রাডার ফাঁকি দিয়ে গভীরে ঢুকে আঘাত হানতে সক্ষম। এর বিপরীতে ইরান এখনো মূলত সোভিয়েত আমলের পুরনো মিগ ও সুখোই বিমানের ওপর নির্ভরশীল। তবে তারা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রে অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে—বিশেষত Shahed 136 কামিকাজে ড্রোন ও Hypersonic Fattah মিসাইলের কারণে।

ইরান বর্তমানে মাসে প্রায় ৩০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলসহ আশপাশের মার্কিন ঘাঁটিগুলোকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে।

তবে এই হুমকি মোকাবিলায় ইসরায়েলের রয়েছে একাধিক স্তরে গঠিত শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যূহ—Iron Dome, David’s Sling, Arrow-3 এবং Patriot ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মিলিয়ে গড়ে উঠেছে এমন একটি রক্ষা ছাদ, যা শত্রুর প্রায় ৯০-৯৫% হামলা প্রতিহত করতে পারে।

অন্যদিকে, ইরানের S-300, Corad-15 ও Tactical Hunter সিস্টেম তুলনামূলকভাবে পুরনো এবং সাম্প্রতিক ইসরায়েলি আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত।

সবচেয়ে বড় ফারাক, পারমাণবিক অস্ত্র। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে না বললেও Jericho-2 ব্যালিস্টিক মিসাইলের মাধ্যমে পারমাণবিক সক্ষমতা রাখে বলে আন্তর্জাতিক মহলে ধারণা। আর ইরান এখনও এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি, যদিও তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা স্পষ্ট।

ফলে, বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের সেনা ও ক্ষেপণাস্ত্র সংখ্যা যতই হোক না কেন, আকাশসীমায় আধিপত্য এখনো ইসরায়েলের দখলে। যুদ্ধের মূল নাটকীয়তা সেখানেই জমে উঠছে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ

আকাশেই নির্ধারিত হবে যুদ্ধের ভাগ্য: ইরানের সেনা-মিসাইল বনাম ইসরায়েলের প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা চাদর

আপডেট সময় ১১:১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

দশকের পর দশক ধরে চলা উত্তেজনার পর অবশেষে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী—ইরান ও ইসরায়েল। বাহ্যিকভাবে ইরান এগিয়ে থাকলেও বিশ্লেষকদের মতে, আধুনিক প্রযুক্তির দিক থেকে এখনো ইসরায়েল অনেক এগিয়ে। আর এই যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু হতে যাচ্ছে আকাশ—যেখানে ইসরায়েলের আধিপত্য অনেকটাই নিশ্চিত।

সামরিক শক্তির হিসেবে ইরানের রয়েছে প্রায় ৯ লাখ ৬০ হাজার সেনা ও রিজার্ভ সদস্য, যেখানে ইসরায়েলের মোট সেনা শক্তি ৬ লাখ ৩৪ হাজার। জনসংখ্যায়ও ইরান অনেক বড়—৮৬ মিলিয়নের বিপরীতে ইসরায়েলের ১০ মিলিয়ন। তবে আধুনিক যুদ্ধের ময়দানে এসব সংখ্যার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় প্রযুক্তি, গোয়েন্দা সক্ষমতা ও আকাশ প্রতিরক্ষা।

ইসরায়েলের কাছে রয়েছে মার্কিন সহায়তায় প্রাপ্ত F-15, F-16 ও আধুনিকতম F-35 স্টেলথ যুদ্ধবিমান, যা রাডার ফাঁকি দিয়ে গভীরে ঢুকে আঘাত হানতে সক্ষম। এর বিপরীতে ইরান এখনো মূলত সোভিয়েত আমলের পুরনো মিগ ও সুখোই বিমানের ওপর নির্ভরশীল। তবে তারা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রে অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে—বিশেষত Shahed 136 কামিকাজে ড্রোন ও Hypersonic Fattah মিসাইলের কারণে।

ইরান বর্তমানে মাসে প্রায় ৩০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পারে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলসহ আশপাশের মার্কিন ঘাঁটিগুলোকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে।

তবে এই হুমকি মোকাবিলায় ইসরায়েলের রয়েছে একাধিক স্তরে গঠিত শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যূহ—Iron Dome, David’s Sling, Arrow-3 এবং Patriot ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মিলিয়ে গড়ে উঠেছে এমন একটি রক্ষা ছাদ, যা শত্রুর প্রায় ৯০-৯৫% হামলা প্রতিহত করতে পারে।

অন্যদিকে, ইরানের S-300, Corad-15 ও Tactical Hunter সিস্টেম তুলনামূলকভাবে পুরনো এবং সাম্প্রতিক ইসরায়েলি আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত।

সবচেয়ে বড় ফারাক, পারমাণবিক অস্ত্র। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে না বললেও Jericho-2 ব্যালিস্টিক মিসাইলের মাধ্যমে পারমাণবিক সক্ষমতা রাখে বলে আন্তর্জাতিক মহলে ধারণা। আর ইরান এখনও এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি, যদিও তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা স্পষ্ট।

ফলে, বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের সেনা ও ক্ষেপণাস্ত্র সংখ্যা যতই হোক না কেন, আকাশসীমায় আধিপত্য এখনো ইসরায়েলের দখলে। যুদ্ধের মূল নাটকীয়তা সেখানেই জমে উঠছে।