ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ সালাউদ্দিনকে ‘গডফাদার’ ডাকায় উত্তাল কক্সবাজার, এনসিপির সমাবেশে ভাঙচুর চাঁদা নেব না, নিতেও দেব না: জামায়াত আমির বক্তব্যের মাঝে মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির মজলুমরা আজ জালিম হয়ে উঠছে: নুর জামায়াতের সমাবেশে দাওয়াত পায়নি বিএনপি বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের জায়গা হবে না: জামায়াতের সমাবেশে সারজিস উগান্ডায় বোম পড়লেও কি বিএনপির দোষ?: পার্থ বর্তমানে আওয়ামী লীগ বলে কিছু নেই, এটি একটি মাফিয়া চক্রে পরিণত: সোহেল তাজ ভারতের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আমার ছেলে শহীদ হয়: আবরার ফাহাদের বাবা

জাতিসংঘ থেকে দুঃসংবাদ পেল ইসরায়েল

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০১:০২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
  • ৭০২ বার পড়া হয়েছে

এবার দশকের পর দশক ধরে নিপীড়িত এক জাতির নাম ফিলিস্তিন। নিজের ভূমিতে পরবাসী এই জাতিকে ঘিরে বহুবার ‘শান্তির প্রতিশ্রুতি’ দিয়েছে বিশ্ব নেতারা—ক্যাম্প ডেভিড, অসলো চুক্তি, জাতিসংঘে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির আশ্বাস। কিন্তু বাস্তবে ফিলিস্তিনিরা এখনো বিশ্বের কাছে এক নিপীড়িত-নিষ্পেষিত-বঞ্চিত জাতি হিসেবে পরিচিত।

এদিকে অধিকৃত ভূখণ্ডে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল যে নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তা মানবাধিকারের মৌলিক মাপকাঠিতেই প্রশ্নবিদ্ধ। মানবাধিকারের প্রথম ও প্রধান অধিকার—বেঁচে থাকার অধিকার। আজকের অধিকৃত ফিলিস্তিনে সেই অধিকার কতটুকু বহাল আছে?

যখন ফিলিস্তিনিরা শত শত মৃত্যু আর নিপীড়নের পর একটু রুখে দাঁড়ায়, তখন তাদের বলা হয় ‘সন্ত্রাসী’। আর যখন ইসরায়েল বোমা ফেলে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়িতে, তখন সেটাকে বলা হয় ‘আত্মরক্ষার অধিকার’।

পশ্চিমা বিশ্ব, যারা নিজেদের ‘মানবাধিকারের অভিভাবক’ মনে করে, তারাই এই বৈষম্যমূলক নীতির ছত্রছায়ায় সাত দশক পার করেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই জাতিসংঘ থেকে এলো ইসরায়েলের জন্য দুঃসংবাদ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতিসংঘ প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে শিশুদের ওপর সহিংসতা নজিরবিহীন মাত্রায় পৌঁছেছে।

বিশেষ করে গাজা উপত্যকা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে শিশুদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। জাতিসংঘ এই প্রতিবেদনে দ্বিতীয় বছরের মতো ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করেছে। এই তালিকায় সেই সব দেশ বা পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যারা সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ ও নির্যাতন চালিয়েছে।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, শুধু অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ও ইসরায়েলেই ২০২৪ সালে মোট ২,৯৫৯ শিশুর ওপর ঘটেছে ৮,৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, অঙ্গহানি, যৌন সহিংসতা, স্কুল ও হাসপাতালের ওপর হামলা ইত্যাদি।

এরই মধ্যে চলতি মাসের ১৩ জুন ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আলজাজিরার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হামলার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের ব্যাপারে আলোচনা চলছিল। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরানে হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল কেবল মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থির করে তুলেছে।

একদিকে জাতিসংঘের রিপোর্ট ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে, অন্যদিকে ফিলিস্তিনে হামলার মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে কালো তালিকায় থাকা একটি দেশ যখন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে শান্তির বুলি আউড়ে, তখন বিশ্ব বিবেক কি চোখ খুলবে? এই প্রশ্ন এখন গোটা দুনিয়ার দরবারে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চকরিয়াতে জাতীয় নাগরিক পার্টির গাড়িবহর আটকে রেখেছে বিএনপির লোকজন: হান্নান মাসুদ

জাতিসংঘ থেকে দুঃসংবাদ পেল ইসরায়েল

আপডেট সময় ০১:০২:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

এবার দশকের পর দশক ধরে নিপীড়িত এক জাতির নাম ফিলিস্তিন। নিজের ভূমিতে পরবাসী এই জাতিকে ঘিরে বহুবার ‘শান্তির প্রতিশ্রুতি’ দিয়েছে বিশ্ব নেতারা—ক্যাম্প ডেভিড, অসলো চুক্তি, জাতিসংঘে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির আশ্বাস। কিন্তু বাস্তবে ফিলিস্তিনিরা এখনো বিশ্বের কাছে এক নিপীড়িত-নিষ্পেষিত-বঞ্চিত জাতি হিসেবে পরিচিত।

এদিকে অধিকৃত ভূখণ্ডে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল যে নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তা মানবাধিকারের মৌলিক মাপকাঠিতেই প্রশ্নবিদ্ধ। মানবাধিকারের প্রথম ও প্রধান অধিকার—বেঁচে থাকার অধিকার। আজকের অধিকৃত ফিলিস্তিনে সেই অধিকার কতটুকু বহাল আছে?

যখন ফিলিস্তিনিরা শত শত মৃত্যু আর নিপীড়নের পর একটু রুখে দাঁড়ায়, তখন তাদের বলা হয় ‘সন্ত্রাসী’। আর যখন ইসরায়েল বোমা ফেলে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়িতে, তখন সেটাকে বলা হয় ‘আত্মরক্ষার অধিকার’।

পশ্চিমা বিশ্ব, যারা নিজেদের ‘মানবাধিকারের অভিভাবক’ মনে করে, তারাই এই বৈষম্যমূলক নীতির ছত্রছায়ায় সাত দশক পার করেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই জাতিসংঘ থেকে এলো ইসরায়েলের জন্য দুঃসংবাদ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতিসংঘ প্রকাশিত এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে শিশুদের ওপর সহিংসতা নজিরবিহীন মাত্রায় পৌঁছেছে।

বিশেষ করে গাজা উপত্যকা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে শিশুদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। জাতিসংঘ এই প্রতিবেদনে দ্বিতীয় বছরের মতো ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করেছে। এই তালিকায় সেই সব দেশ বা পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যারা সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ ও নির্যাতন চালিয়েছে।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, শুধু অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ও ইসরায়েলেই ২০২৪ সালে মোট ২,৯৫৯ শিশুর ওপর ঘটেছে ৮,৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, অঙ্গহানি, যৌন সহিংসতা, স্কুল ও হাসপাতালের ওপর হামলা ইত্যাদি।

এরই মধ্যে চলতি মাসের ১৩ জুন ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আলজাজিরার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হামলার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের ব্যাপারে আলোচনা চলছিল। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরানে হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল কেবল মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থির করে তুলেছে।

একদিকে জাতিসংঘের রিপোর্ট ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে, অন্যদিকে ফিলিস্তিনে হামলার মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে কালো তালিকায় থাকা একটি দেশ যখন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে শান্তির বুলি আউড়ে, তখন বিশ্ব বিবেক কি চোখ খুলবে? এই প্রশ্ন এখন গোটা দুনিয়ার দরবারে।