মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলিতে দুই সংসদীয় আসনের জামায়াত ইসলামী প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে গত ২৭ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের দিবা শাখার অ্যাসেম্বলিতে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম মাগুরা-১ আসনের প্রার্থী আবদুল মতিন ও মাগুরা-২ আসনের প্রার্থী এমবি বাকেরকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের কাছে নিজেদের দলীয় প্রতীক তুলে ধরেন এবং তাদের অভিভাবকদের সমর্থন কামনা করেন।
এ ঘটনায় শিক্ষক, অভিভাবক ও সচেতন নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক প্রচারের স্থান নয়; এমন কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিভ্রান্তি তৈরি হয় ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়।
অভিযুক্ত প্রার্থী এমবি বাকের দাবি করেন, “আমরা শুধু শুভেচ্ছা জানাতে ও দোয়া নিতে গিয়েছিলাম। শিক্ষার্থীদের অনেকের অভিভাবক ভোটার, তাই তাদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেছি মাত্র।”
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, “বিদ্যালয় থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক কার্যক্রম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।”
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলামও স্বীকার করেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জায়গা নয়। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সবাইকে সংবেদনশীল থাকতে হবে।”
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (শিক্ষা ও আইসিটি) শাশ্বতী শীল জানান, “বিষয়টি আগামী আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনার জন্য উপস্থাপন করা হবে।”
এ ঘটনায় ৩ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে। তারা বিদ্যালয়কে রাজনীতিমুক্ত রাখার দাবি জানায় এবং প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেয়।
জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, “ঘটনার তদন্তে জেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে মাগুরা জেলা জামায়াতে ইসলামের ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক সাঈদ আহমাদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “আমাদের প্রার্থীরা বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। যদি কারও বক্তব্যে শব্দ ব্যবহারে ত্রুটি হয়ে থাকে, তা ভবিষ্যতে আরও সতর্কতার সঙ্গে দেখা হবে।”

ডেস্ক রিপোর্ট 



















