চারদিনের গুরুত্বপূর্ণ জাপান সফর শেষে দেশে ফিরছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাপানের স্থানীয় সময় শনিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিট) তিনি ঢাকা উদ্দেশ্যে টোকিও ত্যাগ করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটে ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাপানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
জাপান সফরকালে ড. ইউনূস জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার সামগ্রিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়। উভয় নেতা কৌশলগত অংশীদারত্বের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং চলতি বছরের মধ্যেই একটি অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (EPA) সইয়ের বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেন।
সফরের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো:
- ছয়টি সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হয় দুই দেশের মধ্যে, যার মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
- ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের পর জাপানের বাজারে কমপক্ষে তিন বছরের জন্য শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের অনুরোধ জানান ড. ইউনূস।
- মাতারবাড়িতে স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল এবং মহেশখালীতে এলপিজি আমদানি টার্মিনাল নির্মাণে জাপানের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
- ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নয়ন এবং মেঘনা-গোমতী নদীর ওপর চার লেনের নতুন সেতু নির্মাণে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়।
- অটোমোবাইল, বৈদ্যুতিক যানবাহন, হালকা যন্ত্রপাতি, উচ্চ প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক্স ও সৌরশক্তি খাতে জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে জাপান সরকারকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান ড. ইউনূস।
- ‘বাংলাদেশ-জাপান স্কিলড ওয়ার্কফোর্স পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম’ চালুর প্রস্তাব দেন, যাতে জাপানে দক্ষ বাংলাদেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।
জাপান সফর শেষে দেশে ফেরা ড. ইউনূসের এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বাংলাদেশ ও জাপানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায় রচিত হলো এই সফরের মধ্য দিয়ে।