এবার ইসরাইলি বাহিনীর হেফাজতে পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থুনবার্গের ওপর কড়া নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন ফেরত আসা মানবাধিকার কর্মীরা।সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (৪ অক্টোবর) আটক ৪৭০ জনের মধ্যে ১৩৭ জনকে তুরস্কে ফেরত পাঠায় ইসরাইল। তাদের মধ্যে ৩৬ জন তুরস্কের নাগরিক বলে দেশটির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া বাকিরা যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আলজেরিয়া, মরক্কো, ইতালি, কুয়েত, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, মৌরিতানিয়া, সুইজারল্যান্ড, তিউনিশিয়া ও জর্ডানের নাগরিক বলে জানায় তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফেরত আসা এই মানবাধিকার কর্মীরা ইসরাইলি সেনাবাহিনীদের পশুসুলভ কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। তুর্কি সাংবাদিক ও গাজা সুমুদ ফ্লোটিলার অংশ নেয়া এরসিন চেলিক স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, ইসরাইলি বাহিনী গ্রেটা থুনবার্গের ওপর অমানষিক নির্যাতন করেছে। তার ভাষায়, তাকে (গ্রেটাকে) চুল ধরে টেনে নিয়ে যায়, মারধর করে এবং ইসরাইলি পতাকা চুমু খেতে বাধ্য করা হয়।
মালয়েশীয় অধিকারকর্মী হাজওয়ানি হেলমি ও মার্কিন অংশগ্রহণকারী উইন্ডফিল্ড বিবার ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে একই অভিযোগের বর্ণনা দেন। তারা অভিযোগ করেন, থুনবার্গকে ধাক্কা দিয়ে ইসরাইলি পতাকা হাতে প্রদর্শন করা হয়। হাজওয়ানি হেলমি বলেন, ‘এটা ছিল এক দুঃস্বপ্নের মতো। তারা আমাদের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করেছিল। আটক ব্যক্তিদের খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধ থেকেও বঞ্চিত করা হয়।’
বিবার বলেন, থুনাবার্গের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়। তাকে প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর আচরণ ছিল ভয়াবহ। গ্রেটার শরীরে তারা ইসরাইলি পতাকা জড়িয়ে দেয়, আর যেভাবে খুশি তাকে ঠেলে-ধাক্কা দিয়ে টেনে নিয়ে যায়। খুব আক্রমণাত্মকভাবে একটা প্রাইভেট রুমে গ্রেটাকে ধাক্কা দিয়ে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এরপর বেন-গভির সেখানে এসে সেই রুমে ঢোকে। পুরো ব্যাপারটা ছিল ভয়ানক।
ফ্লোটিলায় অংশ নেয়া ইতালীয় সাংবাদিক লরেঞ্জো আগোস্টিনো আনাদোলুকে বলেন, গ্রেটা থুনবার্গ একজন সাহসী নারী, মাত্র ২২ বছর বয়সি। তাকে অপমান করা হয়েছিল। তার শরীরে ইসরাইলি পতাকায় মুড়িয়ে ট্রফির মতো প্রদর্শন করা হয়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এক বিবৃতিতে ইসরাইল জানিয়েছে, সব বন্দিকে আইনানুগভাবে পানি, খাদ্য, চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা দেয়া হয়েছে। থানবার্গ সম্পর্কিত খবরগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।
এদিকে, ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের নতুন দুইটি জাহাজ গাজার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। এ নিয়ে মোট ১১টি জাহাজ আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছে। অভিযানটি ইসরাইলের অবরোধ ভাঙার চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নতুন দুইটি জাহাজ, ঘাসান কানাফানি ও আল-আউদা ১৭০ আন্তর্জাতিক কর্মী বহন করছে। প্রধান জাহাজের মধ্যে রয়েছে ‘ডক্টরস অ্যান্ড জার্নালিস্টস শিপ’ বা আল-দামির, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের বহন করছে।

ডেস্ক রিপোর্ট 



















