ঢাকা , শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
সংবিধানে গণভোট নেই, কথায় কথায় রাস্তায় নামবেন না: আমীর খসরু হাসিনাকে প্রমোট করতে ভারত সর্বশক্তি ব্যবহার করছে: দাবি রনির মঞ্জু ভাই টাচ করে কথা বলা পছন্দ করতেন, শোল্ডার- হাতে ধরতো: বিস্ফোরক মন্তব্য সাবেক অধিনায়কের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের নাম সরিয়ে নিলো যুক্তরাষ্ট্র উন্মুক্ত মাঠে এবছরের সব তাফসির মাহফিল স্থগিত ঘোষণা করলেন মিজানুর রহমান আজহারী আরিফিন শুভর রাজউকের ১০ কাঠার প্লট ফিরিয়ে দিতে বললেন পরিচালক শেখ হাসিনা ও আ. লীগ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: প্রেসসচিব দুর্নীতি-দুঃশাসন মুক্তিতে কারও সাথে আপস করবে না জামায়াত: ডা. শফিকুর রহমান জবিতে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে জমকালো কাওয়ালি সন্ধ্যা দলগুলো না পারলে গণভোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: প্রেস সচিব

জাতিসংঘের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্থগিত করলো ইরান 

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১২:০৫:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৩৪ বার পড়া হয়েছে

এবার জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা (ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি- আইএইএ)- এর সঙ্গে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছে ইরান।রবিবার (১২ অক্টোবর) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রবিবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরাগচি বলেন, ‘আমরা আইএইএ-এর সঙ্গে পরমাণু সহাযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছি। জাতিসংঘ যদি এমন কোনো প্রস্তাব দেয়, যা ইরানের অধিকার ও জাতীয় স্বার্থের রক্ষার জন্য সহায়ক— আমরা আবার চুক্তিতে ফিরে যাবো।’

১৯৬৮ সালে আইইএ’র সঙ্গে নন-প্রোলিফারেশন অ্যাক্ট বা এনপিটি চুক্তি করেছিলো ইরান। সে সময় অবশ্য বর্তমান ইসলাপন্থি শাসকগোষ্ঠী শাসনক্ষমতায় ছিলো না। ইরানের সর্বশেষ রাজা বা শাহ রেজা পাহালভী তখন ইরানের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ছিলেন। আইএইএ-এর সঙ্গে এএনপিটি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইরান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো যে দেশটি কখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না এবং আইএইএ-কে সহযোগিতা করবে।
বাংলাভিশনের গুগল নিউজ ফলো করতে ক্লিক করুন

জুন মাসে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পর আইএইএ-এর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক তিক্ত হয়। গত ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলো— ইরানের কাছে বর্তমানে ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত আছে। এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতার মান ৬০ শতাংশ। এই বিশুদ্ধতা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা যায়, তাহলে অনায়েসেই তা দিয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব। আইএইএ এই বিবৃতি দেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় ১২ জুন দিবাগত রাতে ইরানে বিমান অভিযান ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ শুরু করে ইসরায়েল। অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় বলেছিলেন, জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার বিবৃতিতে আমলে নিয়ে এ অভিযান শুরু হয়েছে।

ইসরাইলের সঙ্গে ১২ দিন ধরে সংঘাত চলে ইরানের। শেষ পর্যায়ে এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রও। এই ১২ ‍দিনের সংঘাতে ইরানের সেনাপ্রধান ও সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং কমপক্ষে ১২ জন জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিন্তু সেই ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের হদিস এখনও পাওয়া যায়নি। জাতিসংঘ এখনও জানে না যে সেই ইউরেনিয়াম কোথায় আছে।

ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাত শেষ হওয়ার পর তেহরান সফর এবং পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ইরানের সঙ্গে সংলাপের আগ্রহ জানায় আইএইএ; কিন্তু ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরান সংলাপের জন্য প্রস্তুত এবং আইএইএ-এর প্রতিনিধি দল তেহরান সফরে আসতে পারবেন; পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলো তাদের দেখাতে তেহরান বাধ্য থাকবে না।

এর পর গত সেপ্টেম্বরে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রঢীদের সঙ্গে বৈঠক করেন আব্বাস আরাগচি। বৈঠকে জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে নিতে ইরানকে আহ্বান জানান এই তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা, তবে ইরান তার অবস্থানে অনড় থাকায় সেই আহ্বান ব্যর্থ হয়। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জাতিসংঘ। রবিবারের সাক্ষাৎকারে আরাগচিকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফের বৈঠক করবেন কি না— এমন এক প্রশ্নের জবাবে আরাগচি বলেন, ‘আমরা তার প্রয়োজন দেখছি না। ইউরোপের সঙ্গে বৈঠকের আর কোনো ভিত্তি নেই।’ -সূত্র : আরটি

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সংবিধানে গণভোট নেই, কথায় কথায় রাস্তায় নামবেন না: আমীর খসরু

জাতিসংঘের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্থগিত করলো ইরান 

আপডেট সময় ১২:০৫:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

এবার জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা (ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি- আইএইএ)- এর সঙ্গে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছে ইরান।রবিবার (১২ অক্টোবর) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রবিবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরাগচি বলেন, ‘আমরা আইএইএ-এর সঙ্গে পরমাণু সহাযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছি। জাতিসংঘ যদি এমন কোনো প্রস্তাব দেয়, যা ইরানের অধিকার ও জাতীয় স্বার্থের রক্ষার জন্য সহায়ক— আমরা আবার চুক্তিতে ফিরে যাবো।’

১৯৬৮ সালে আইইএ’র সঙ্গে নন-প্রোলিফারেশন অ্যাক্ট বা এনপিটি চুক্তি করেছিলো ইরান। সে সময় অবশ্য বর্তমান ইসলাপন্থি শাসকগোষ্ঠী শাসনক্ষমতায় ছিলো না। ইরানের সর্বশেষ রাজা বা শাহ রেজা পাহালভী তখন ইরানের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান ছিলেন। আইএইএ-এর সঙ্গে এএনপিটি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে ইরান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো যে দেশটি কখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না এবং আইএইএ-কে সহযোগিতা করবে।
বাংলাভিশনের গুগল নিউজ ফলো করতে ক্লিক করুন

জুন মাসে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পর আইএইএ-এর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক তিক্ত হয়। গত ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলো— ইরানের কাছে বর্তমানে ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত আছে। এই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতার মান ৬০ শতাংশ। এই বিশুদ্ধতা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা যায়, তাহলে অনায়েসেই তা দিয়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব। আইএইএ এই বিবৃতি দেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় ১২ জুন দিবাগত রাতে ইরানে বিমান অভিযান ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ শুরু করে ইসরায়েল। অভিযান শুরুর কিছুক্ষণ পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় বলেছিলেন, জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার বিবৃতিতে আমলে নিয়ে এ অভিযান শুরু হয়েছে।

ইসরাইলের সঙ্গে ১২ দিন ধরে সংঘাত চলে ইরানের। শেষ পর্যায়ে এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রও। এই ১২ ‍দিনের সংঘাতে ইরানের সেনাপ্রধান ও সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং কমপক্ষে ১২ জন জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিন্তু সেই ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের হদিস এখনও পাওয়া যায়নি। জাতিসংঘ এখনও জানে না যে সেই ইউরেনিয়াম কোথায় আছে।

ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাত শেষ হওয়ার পর তেহরান সফর এবং পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ইরানের সঙ্গে সংলাপের আগ্রহ জানায় আইএইএ; কিন্তু ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরান সংলাপের জন্য প্রস্তুত এবং আইএইএ-এর প্রতিনিধি দল তেহরান সফরে আসতে পারবেন; পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলো তাদের দেখাতে তেহরান বাধ্য থাকবে না।

এর পর গত সেপ্টেম্বরে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রঢীদের সঙ্গে বৈঠক করেন আব্বাস আরাগচি। বৈঠকে জাতিসংঘের প্রস্তাব মেনে নিতে ইরানকে আহ্বান জানান এই তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা, তবে ইরান তার অবস্থানে অনড় থাকায় সেই আহ্বান ব্যর্থ হয়। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জাতিসংঘ। রবিবারের সাক্ষাৎকারে আরাগচিকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফের বৈঠক করবেন কি না— এমন এক প্রশ্নের জবাবে আরাগচি বলেন, ‘আমরা তার প্রয়োজন দেখছি না। ইউরোপের সঙ্গে বৈঠকের আর কোনো ভিত্তি নেই।’ -সূত্র : আরটি